রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের ওম্বুডসম্যান ডি কে জৈন যে নোটিস পাঠিয়েছিলেন, তার উত্তর রবিবার দিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ঘটনা চিন্নাস্বামীতে দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচের কিছুক্ষণ আগের। কলকাতার তিন ক্রিকেটপ্রেমী সৌরভের বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ তুলেছিলেন এটা বলে যে, কীভাবে একই সঙ্গে তিনি সিএবি প্রেসিডেন্ট এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের উপদেষ্টা পদে থাকতে পারেন। আগামী ১২ এপ্রিল ইডেনে কেকেআর ম্যাচে সৌরভের দিল্লি ডাগআউটে বসা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। আকারে-ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা হয়েছিল যে, সৌরভ পিচ প্রস্তুতিতে নিজের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারেন। সব অভিযোগের উত্তর দিলেন সৌরভ। যুক্তি দিয়ে, পুঙ্খাপুঙ্খভাবে, অভিযোগ ধরে ধরে। বোর্ড সূত্র মারফত যে চিঠির বয়ান সংবাদ প্রতিদিন-এর হাতে এল।
‘….আমি প্রথমেই বলে নিতে চাই যে, ভারতীয় বোর্ডে কোনও পদে আমি আর নেই। আমি অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সদস্য নই। বোর্ড পদাধিকারী কিংবা বোর্ড গঠিত কোনও কমিটিতেও আমি আর নেই। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে আমি এটাও বলতে চাই যে আইপিএল প্রশাসন, তার ম্যানেজমেন্ট কিংবা টুর্নামেন্ট সংক্রান্ত কোনও কমিটির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই আমার। এটা ঠিক যে, ভারতীয় বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটিতে আমি আগে ছিলাম। আইপিএল টেকনিক্যাল কমিটি, আইপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলেও ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে সেই সব কমিটি থেকে আমি পুরোপুরি সরে গিয়েছি। হয় ইস্তফা দিয়েছি। নয়তো নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আইপিএল প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ আছে, কিংবা আইপিএলকে নিয়ন্ত্রণ করে এরকম কোনও কমিটির সঙ্গে আমার আর কোনও যোগাযোগ নেই। সে সবের অংশ আমি আর নই।
[আরও পড়ুন: লিন-নারিন জুটিতেই বাজিমাত, একপেশে ম্যাচে রাজস্থানকে হারাল কেকেআর]
পাশাপাশি আমি এটাও বলতে চাই যে, কেকেআর একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টিম। যার মালিক রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। ১৯৫৬ সালের কোম্পানিজ অ্যাক্টে যে সংস্থা নথিভুক্ত। আমি রেড চিলিজের শেয়ারহোল্ডার নই। সংস্থার মালিক নই। রেড চিলিজে কোনওরকম অংশীদারিত্ব আমার নেই। শুধুমাত্র মাঝের কয়েকটা বছর আমি ওদের টিম কেকেআরের হয়ে খেলেছিলাম। আইপিএল ১, আইপিএল ২ আর আইপিএল ৩-এ। কিন্তু এর বাইরে রেড চিলিজ কিংবা ওদের টিম কেকেআরের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।
রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড বা কেকেআর কারও সঙ্গে সিএবিরও কোনও যোগাযোগ নেই। সম্পর্ক নেই। সিএবির কেকেআরে কোনও অংশীদারিত্ব কিংবা স্বত্ত্ব নেই। কেকেআর টিমের মালিকানা যাদের, সেই সংস্থাতেও কিছু নেই সিএবির। কেকেআরের প্রশাসন, মালিকানা, ম্যানেজমেন্ট, কোনও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ নেই সিএবির। কেকেআরকে সিএবি কিছু নিয়ে কোনও পরামর্শও দিতে যায় না। আইপিএল মরশুমে সিএবি শুধু একটা জিনিসই করে। অর্থের পরিবর্তে কেকেআরকে ইডেন ভাড়া দেয়। ব্যস, এটুকু।
[আরও পড়ুন: নিজের দলের বোলারের উপর মেজাজ হারালেন ধোনি, ভাইরাল ভিডিও]
আমার আরও একটা ব্যাপার নিয়ে বলার আছে। বলা হচ্ছে যে, ভারতীয় বোর্ডের কোনও পদে কেউ থাকলে বোর্ড অধীনস্থ কোনও টিম অথবা সদস্যকে প্রভাবিত করতে পারবে না। ব্যক্তিগত সুবিধার্থে ব্যবহার করতে পারবে না। আমি খুব সম্মানের সঙ্গে উত্তরে আপনাকে জানাতে চাই যে, ভারতীয় বোর্ড সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সুবিধা গ্রহণ, বাণিজ্যিক স্বার্থের সংঘাত, নিজের ভূমিকার সঙ্গে আপস করার যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে, তার একটাও আমি করিনি। আমি এমন কোনও জায়গায় নেই, যেখান থেকে আমি কোনও কিছুর উপর প্রভাব খাটাতে পারব। আমি এমন কিছু করছি না যে কারণে দিল্লি ক্যাপিটালসে নিজের ভূমিকা পালন থেকে আমাকে বিরত থাকতে হবে…।’
The post স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগের খোলাখুলি উত্তর দিলেন সৌরভ appeared first on Sangbad Pratidin.