সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট বড় বালাই। অনেকদিন ধরেই দেশের মানুষ ভুক্তভোগী। প্রশাসনের কাছে বহুবার অভিযোগ জানানো হয়েছে, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু যাত্রীদের কথাকে বিশেষ আমল দেওয়া হয়নি। তারই ফল ভুগতে হল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসকে। ‘ট্রেন লেট’-এর কবলে পড়তে হল তাঁকেও। তাই তো অল্প সময়ের পথ পার হতেই লেগে গেল অনেকক্ষণ। অগত্যা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে ট্রেনের মধ্যেই আটকে থাকলেন দেশের সর্বময় কর্তাটিও।
[ইদাইয়ের কোপে বিপর্যস্ত আফ্রিকার দুই দেশ, মোজাম্বিক ও জিম্বোবোয়েতে মৃত কমপক্ষে ১২৭]
একে সামনেই দেশের ভোট। একাধারে জনসংযোগ বাড়ানো যাবে, সঙ্গে সঙ্গে রেলের অবস্থা কতটা খারাপ সেটাও নিজের চোখে দেখা। তাই সম্প্রতি ট্রেন যাত্রার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই যাত্রা মোটেও সুখকর হবে না, তা হয়তো কল্পনা করতেও পারেননি প্রেসিডেন্ট। হয়তো ভেবেছিলেন যাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অল্প পথ দিব্যি চলে যাওয়া যাবে। সাধারণ মানুষ হাতের কাছে প্রেসিডেন্টকে পেয়ে যেমন সকলেই আপ্লুত হবেন, তেমনই এই চালেই ভোটের আগেই কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবেন দেশের প্রধানও। কিন্তু সবকিছুতেই জল ঢেলে দিল ট্রেন ‘লেট’। মাত্র ৩০ মিনিটের পথ যেতেই ট্রেনটির লেগে যায় প্রায় তিন ঘণ্টা। ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, “দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার খোলনলচে দ্রুত বদলাতে হবে। এমনকী, এই অবস্থাকে ‘জাতীয় সমস্যা’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে সমস্যার সমাধানের পথ বের করার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট।
ভোরের ট্রেনে প্রেসিডেন্টকে দেখে প্রথমকে কিছুটা হলেও অবাক হয়েছিলেন যাত্রীরা। ভালই কাটছিল। যাত্রার সময় প্রেসিডেন্টের সঙ্গী চিত্র সাংবাদিকরা বেশ কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তাঁর। সেখানে দেখা গিয়েছে, প্রথমদিকে বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন তিনি। যাত্রীদের সঙ্গে অভাব-অভিযোগ শুনছিলেন। নানা বিষয়ে আলোচনাও করছিলেন। হঠাৎ ছন্দপতন। এত অল্প পথ কেন দেরি হচ্ছে? ট্রেন কেন দাঁড়িয়ে? খোঁজ নিতেই তিনি জানতে পারেন, ট্রেন ‘লেট’। শুধু তাই নয়, ট্রেন এতটাই আস্তে যাচ্ছে যে, মানুষও তার থেকে বেশি তাড়াতাড়ি হাঁটতে পারে। অনেক সময় তো দাঁড়িয়েই ছিল ট্রেনটি। আর এই অবস্থার মধ্যে পড়েই যাত্রীদের সঙ্গে ট্রেনেই আটকে থাকতে হয় প্রেসিডেন্টকেও। পরে গন্তব্যে এসে পৌঁছাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ। প্রেসিডেন্টের এই অবস্থা দেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের মানুষ নিজেদের এতদিনকার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, “আমাদের পৃথিবীতে প্রেসিডেন্টকে স্বাগত।” কেউ তো আবার বলেছেন, “বহুদিন ধরেই সমস্যার কথা জানিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল। পাত্তা দেওয়া হয়নি। আসলে সামনেই তো ভোট, সেই কারণে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা মনে পড়েছে সরকারের।”
রাজনৈতিক মহলে প্রেসিডেন্টের এই ভ্রমণ সম্পর্কে নানা মত দেখা গিয়েছে। কেউ কেউ তো প্রেসিডেন্টের এই সফরের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এর ফলে দেশের মানুষের সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। অনেকে আবার সমালোচনার সুরে জানিয়েছেন, ভোটের কারণেই এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। ভোট মিটে গেলেই সেই একই অবস্থা দেখা যাবে। তবে ট্রেনে দেরিতে চলা তা শুধু সাউথ আফ্রিকা নয় ভারতেও একটি বড়সড় সমস্যা। কতদিন হেলিকপ্টার না চড়ে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করলে নেতারা হয়ত যাত্রীদের অবস্থা খানিকটা বুঝতে পারবেন।
[ভিডিও গেম! চোখে বিস্ময় নিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ক্রাইস্টচার্চের খুদে]
The post ভোটপ্রচারে বেরিয়ে বিপাকে, লোকাল ট্রেনে আটকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট appeared first on Sangbad Pratidin.