সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতি সদাই প্রবহমান। কোথাকার জল কোথায় গড়াবে, এক মুহূর্ত আগেও আঁচ করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিরও তেমনই অবস্থা। দলবদলের খেলায় কে কখন কোন পক্ষে, বোঝা যায় না। কিছু কিছু ঘটনা থেকে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় মাত্র। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন দলত্যাগী শোভন চট্টোপাধ্যায়। যা দেখার পরে জল্পনা উসকে উঠেছে। তবে কি ফের তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছেন প্রাক্তন মেয়র?
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে কাঁথির ‘শান্তিকুঞ্জ’ অর্থাৎ অধিকারী পরিবারের বাসভবনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে ফুলের স্তবক দিয়ে স্বাগত জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শান্তিকুঞ্জে পৌঁছন সুকান্ত। শিশির অধিকারী ও তাঁর স্ত্রীর জন্য উপহারও নিয়ে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি। অধিকারী বাড়িতে খাওয়দাওয়া করেন সুকান্ত। এরপর তাঁকে বিদায় জানাতে এসে সাংবাদিকদের সামনে শুভেন্দু আচমকাই বলেন, ”নন্দীগ্রাম না হলে উনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না।” এই মন্তব্যের পরে অনেকেই মনে করছেন, সেই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল অধিকারী পরিবারের।
[আরও পড়ুন: ‘সংগ্রামের সমাপ্তি’, মুলায়মের প্রয়াণে শোকাহত যোগী, উত্তরপ্রদেশে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা]
শুভেন্দুর ওই মন্তব্যে সমালোচনা শুরু হয়। বিরোধী দলনেতাকে বার্তা দিতে গিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া মন্তব্য করেন তৃণমূল নেত্রীর একদা ঘনিষ্ঠ সহকর্মী শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুকে প্রায় দীর্ঘ ১৫ মিনিটের এক ভিডিওবার্তায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শুভেন্দুর বিরোধিতা করে নন্দীগ্রামে সংগ্রামের দিনগুলির কথা বিশদে জানিয়েছেন। এরপর হুঁশিয়ারির সুরেই শুভেন্দুর উদ্দেশে শোভনের বক্তব্য, ”শালীনতার সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন। ভেবেছিলাম শিশিরদা অন্তত এই ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদ করবেন।”
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের পর উসকে উঠেছে জল্পনা, তবে কি দলে ফেরার চেষ্টা তিনি করছেন? মাস কয়েক আগে একবার নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। এরপর পুজোর আগে শোভন-বৈশাখীর বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলছিলেন মদন মিত্র। তা নিয়েও নানা গুঞ্জন ওঠে। চলে চর্চা। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এমন দীর্ঘ বক্তব্যে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে উত্তর এখনও অজানা।