সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের শহরে হাজির চালকহীন মেট্রো। আপাতত ওই মেট্রোর একটি মডেল রেক শহরে এসেছে। ঝাঁ চকচকে এই মেট্রোর রেকগুলি চালু হতে হতে জুন মাস। কিন্তু তার আগেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এক নয়া বিতর্ক। কলকাতায় যে মডেল কোচ এসেছে তার গায়ে স্টেশনের নামের বানানে দেখা যাচ্ছে গুচ্ছের ভুল।
[শহরে চালকহীন মেট্রোর রেক, ঝাঁ চকচকে কোচে স্বপ্নের সফর]
মডেল এই রেকটি রাখা হয়েছে সল্টলেকের মেট্রো কেএমআরসিএলের প্রজেক্ট এরিয়ায়। বাংলার সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে কোচের নকশা। কিন্তু সেই কামরাতেই স্টেশনের নামে এত ভুল? ‘হাওড়া ময়দান’ হয়েছে ‘হাওড়া ময়দানে’, ‘এসপ্ল্যানেড’ হয়েছে ‘এস্প্ল্যান্ডে’। এখানেই শেষ নয়, ‘শিয়ালদহ’ হয়েছে ‘শিয়ালদাহ’, ‘ফুলবাগান’ হয়েছে ‘ফোলবাগান’। প্রশ্ন উঠছে, প্রায় ৬৫ কোটি টাকা খরচ করে এক একটি কোচ তৈরি হল, আর সেখানে এই ভুলগুলির দিকে কেউ নজর দিল না কেন? বাংলার সংস্কৃতি কি ক্ষুণ্ণ হল না এক্ষেত্রে? ভাষা বিভ্রাটের জন্য কিন্তু বেঙ্গালুরু মেট্রো চালুর পথে বহু বাধা বিপত্তি এসেছে। হিন্দি নয়, যথাযথ কন্নড় ভাষায় লিখতে হবে স্টেশনের নাম- দাবি করেছিলেন কর্ণাটকবাসীদের একাংশ। এবার কলকাতা মেট্রোতে বাংলা বানানে ভুল হলে সুশীল সমাজ কি চুপচাপ থাকবে? প্রশ্নটা উঠেই যাচ্ছে।
[পরীক্ষাতেই ডাহা ফেল, উদ্বোধনের আগে দুর্ঘটনার কবলে দিল্লির চালকবিহীন মেট্রো]
মেট্রো রেলের তরফে অবশ্য এই বিতর্ককে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই বলে যে, এটি মডেল কোচ। মার্চে আসবে পাঁচটি রেক। তখন আর কোনও ভুল থাকবে না। শুধরে ফেলা হবে ভুল বানান। এগুলি স্রেফ ডামি। মূলত কাঠামোটি ঠিক রয়েছে কি না, সেটাই দেখার জন্য আনা হয়েছে কলকাতায়। রেকগুলি তৈরি করেছে বেঙ্গালুরু অর্থ মুভার লিমিটেড। একটি রেকে থাকবে ৬টি বগি। আপাতত মডেল রেক এলেও দ্রুতই চলে আসবে মেট্রোর আসল রেকগুলি। যাত্রাপথে থাকছে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার বেঙ্গল কেমিক্যাল, সল্টলেক স্টেডিয়াম, ফুলবাগান স্টেশন।
তবে চালকহীন রেক এলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীরা যাতে ভয় না পান, সেকথা ভেবেই ট্রেনে একজন মোটরম্যান থাকবেন। তিনি ট্রেন না চালালেও সার্ভেল্যান্স সিস্টেম থেকে শুরু করে দরজা ঠিকঠাক কাজ করছে কি না সেগুলি খেয়াল রাখবেন। মেট্রোটি চলবে কেন্দ্রীয় নজরদারি পদ্ধতিতে। আড়াই মিনিটের ব্যবধান থাকবে এক একটি মেট্রোর মধ্যে। যাত্রীধারণ ক্ষমতা ২০৬৮ জন। রয়েছে ২০০ জনের বসার মতো ব্যবস্থা। প্রতি স্কোয়ার মিটারে দাঁড়াতে পারবেন ৮ জন করে। এছাড়া বসার সিট থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিসেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। এই রেকগুলি সব ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। পুরোপুরি ভারতীয় প্রযুক্তিতেই রেকগুলি তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের এটা একটি সাফল্য বলে দাবি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের। নয়া কোচ চলে এসে সেখানে এত বড় বানানের ভুলগুলি শুধরে ফেলা হবে কি না, সেটাই এখন দেখার।
[লোকসান আটকাতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ন্যূনতম ভাড়া হবে ১০ টাকা]
The post চালকহীন মেট্রোর মক রেকে স্টেশনের নামে ভুরিভুরি ভুল, আপনার চোখে পড়েছে? appeared first on Sangbad Pratidin.