shono
Advertisement

ভারতীয় ডিফেন্সের রক্তাল্পতা দেখিয়ে দিল উজবেকরা, এশিয়ান কাপ থেকে কার্যত বিদায় সুনীলদের

উজবেকদের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ভারত।
Posted: 09:56 PM Jan 18, 2024Updated: 09:58 PM Jan 18, 2024

উজবেকিস্তান: ৩ (‘৪ ফয়জুল্লায়েভ, ‘১৮ সার্জিভ, ‘৪৯ নাসরুল্লায়েভ)
ভারত: ০

Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারি। মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে বদলে গেল পুরো চিত্র। চলতি এএফসি এশিয়ান কাপ (AFC Asian Cup) হার দিয়েই শুরু করেছিল ভারত (Indian Football Team)। তবে অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারলেও, সেই পরাজয়ে লজ্জা ছিল না। লড়াই ছিল। বিপক্ষের চোখে চোখ রেখে নিজেদের অস্তিত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার তাগিদ ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)-সন্দেশ জিঙ্ঘানদের (Sandesh Jinghan) মধ্যে সেই জয়ের জন্য সেই মরিয়া মনোভাব দেখাই গেল না । বরং উজবেকিস্তানের (Uzbekistan) বিরুদ্ধে ফুটে উঠল ভুলে ভরা ফুটবল। অতি নিম্ন মানের রক্ষণ। আর তাই বিপক্ষের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরে কার্যত বিদায় নেওয়ার পথে ইগর স্টিমাচের (Igor Stimac) দল। তিন গোলদাতা ফয়জুল্লায়েভ, সার্জিভ ও নাসরুল্লায়েভ। তাও আবার প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করেছিল ‘ব্লু টাইগার্স’-রা। 

গত কাতার বিশ্বকাপ খেলা অজিদের গত ম্যাচে ৫০ মিনিট আটকে রেখেছিলেন গুরপ্রীত সিং সান্ধু (Gurpreet Singh Sandhu) -শুভাশিস বোসরা (Subhasish Bose)। কিন্তু এদিন তো শুরু থেকেই ‘লক গেট’ খুলে যায়। স্টিমাচ ৪-৩-৩ ছকে দল সাজালেও লাভ হয়নি। প্রথম মিনিট থেকেই মুহুর্মুহু আক্রমণের ঝড় তুলতে শুরু করে দেয় উজবেকরা। ফল এল হাতেনাতে। মাত্র চার মিনিটেই উজবেকিস্তানকে ১-০ এগিয়ে দিল ফয়জুল্লায়েভ। ভারতের পেনাল্টি এলাকার প্রান্ত থেকে একটি ইনসুইং ক্রস বাড়ান করেন নাসরুল্লায়েভ। সন্দেশ বল ফলো করছিলেন। সন্দেশের পিছনে ফয়জুলেয়ভ ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়। সেটা খেয়াল করেননি ভারতীয় ডিফেন্ডার। শুকরোভ হেড করেছিলেন। ফয়জুল্লায়েভ ছিলেন ভালো জায়গায়। এবং তিনি সেই বল পেয়ে হেডে বল জালে জড়াতে কোনও ভুল করেননি। ফলে ভারতীয় রক্ষণ জমাট বাধার আগেই ফালাফালা করে দিয়ে চার মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন ২০ বছরের উইঙ্গার।

[আরও পড়ুন: সুপার কাপের ডার্বিতে মুখোমুখি মোহন-ইস্ট, কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে?]

সেই গোল হজম করতেই ভারতের রক্ষণ কেঁপে গিয়েছিল। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ১৮ মিনিটে ব্যবধানে বাড়িয়ে নেয় উজবেকরা। ইগর সার্জিভ লিড বাড়িয়ে দেন। এবং এবারও রক্ষণের ভুলেই হয় দ্বিতীয় গোল হজম করে ভারত। রাহুল ভেকে হাফওয়ে লাইনের কাছে অকারণে বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসে থাকেন। ফলে ফয়জুল্লায়েভ সেই ভুলকে পুঁজি করে বলটি ছিনিয়ে নিয়ে উপরের দিকে উঠতে থাকেন। বক্সের ভিতরে তিনি গোল লক্ষ্যে করে শট নিলে আকাশ মিশ্র বলটি আটকানোর চেষ্টা করেন। তবে আকাশ মিশ্রের পায়ে লেগে বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। বলটি কেউ ক্লিয়ার করতে পারেনি। ভারতীয় রক্ষণ পুরো বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল, বরং সেই বল ফলো করে এসে সার্জিভ সহজেই গোলে ঢুকিয়ে দেন। ফলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় উজবেকরা।

প্রথম গোলের পর ফয়জুল্লায়েভের উল্লাস। ছবি: X হ্যান্ডেল

লজ্জার ফুটবল ‘উপহার’ দেওয়ার বহর এখানেই শেষ নয়। প্রথমার্ধের তখন অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে। ভারতের গোল করা তো দূরের বিষয়, উলটে আরও একটি গোল খেয়ে গেল স্টিমাচের দল। ৪৯ মিনিটে উজবেকিস্তানের জন্য ডান দিক থেকে একটি ক্রস আসে এবং নাসরুল্লায়েভ ভারতের মনবীরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বল জালের ভিতরে জড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে তাঁর শট পোস্টে লেগে ফিরে এলেও ভারত সেই শট ক্লিয়ার রার জন্য সেভাবে তৎপর হয়নি। আর ফিরতি বল ধরেই দলের হয়ে তিন নম্বর গোলটি করেন নাসরুল্লায়েভ। ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় উজবেকিস্তান। 

ব্যবধান কমানোর সুযোগ ভারতের কাছেও এসেছিল। সুনীল-আকাশ মিশ্র গোল করার সুযোগ পেলেও বারবার ব্যর্থ হন। যদিও প্রথমার্ধে তিন গোলে পিছিয়ে থাকলেও, দ্বিতীয়ার্ধে কোনও গোল হজম করেনি ভারত। তবে এতে তো স্কোরলাইনে বদল আসবে না। প্রথমার্ধে ভুলের শুধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। সুনীল ছেত্রী ও অনিরুদ্ধ থাপার পরিবর্তে ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ ও ঈশান পন্ডিতাকেও মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন স্টিমাচ। যদিও গোলের মুখ আর খোলা গেল না। তাই এবারও একারাশ হতাশা নিয়েই দেশে ফিরবে ভারতীয় দল। 

এএফসি এশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারলেও কিছুটা লড়াই ছিল। তবে এদিন উজবেকদের ঝড়ের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ভারত। বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ে ৬৮ নম্বরে থাকা দল উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে খাতায়-কলমে পিছিয়ে থাকা ভারতের দুর্বল ফুটবলে সেটা বারবার ফুটে উঠল। এর আগে গত ছয়বারের সাক্ষাতে উজবেকদের জয় ছিল চার ম্যাচে। মাত্র দুটি ম্যাচ ড্র হয়। তবে এবার লজ্জার হার হজম করে প্রতিযোগিতা থেকে কার্যত বিদায় নেওয়ার সঙ্গে, উজবেকদের বিরুদ্ধে জয় সেই অধরাই থেকে গেল।

[আরও পড়ুন: ডার্বির আগে ‘সবুজ মেরুন গান’ হৃদয় ছোঁবে মোহনবাগান সমর্থকদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement