দুলাল দে: ক্রীড়াবিদদের সারমেয় প্রেম নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। মেসি থেকে বিরাট কোহলি, পোষ্য সারমেয়দের সঙ্গে ভাললাগার মুহূর্তগুলি একাধিকবার পোস্ট করেছেন বিভিন্ন সোশাল সাইটে। প্রিয় ‘হাল্কে’—র সঙ্গে ফুটবল খেলার মুহূর্তগুলি কতবার যে মেসি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। শুধু মেসি কেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, হ্যারি কেন, নেমার প্রত্যেক ফুটবলারই মাঝে মধ্যেই নিজেদের প্রিয় পোষ্যকে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। কিন্তু আমাদের ঘরের ছেলে জাতীয় দলের এক নম্বর ডিফেন্ডার এটিকে মোহনবাগানের স্টপার সন্দেশ জিঙ্ঘানের (Sandesh Jhingan) সারমেয়প্রেম বোধহয় এই সব কিছুকেই ছাপিয়ে গেল।
দীর্ঘদিনের রাশিয়ান বান্ধবী ইভানকা পাভোলভার সঙ্গে খুব বেশিদিন বিয়ে হয়নি সন্দেশের। ছ’সাত মাসে আগে ইভানকার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) এই ডিফেন্ডার। ফলে আইএসএল চলাকালীন গোয়ায় টিম হোটেলে সন্দেশের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী। তবে শুধু স্ত্রী নন। সঙ্গে ছিল, ইভানকার প্রিয় সারমেয়। বিয়ের পর থেকে ইভানকার সারমেয় এখন সন্দেশেরও ভীষণ প্রিয়। ফলে ম্যাচ খেলতে এক শহর থেকে আরেক শহরে পা দিয়ে সন্দেশ—ইভানকার সঙ্গে থাকে তাঁদের প্রিয় সারমেয়ও। আইএসএল চলাকালীন গোয়ার টিম হোটেলে সন্দেশ—ইভানকার সঙ্গে দিব্যি ছিল তাঁদের পোষ্য সারমেয়টি। সমস্যা বাধল কলকাতায় এসে।
[আরও পড়ুন: মুম্বই ম্যাচে নিয়মভঙ্গের জেরে বড়সড় জরিমানার মুখে নীতীশ রানা, সতর্ক করা হল বুমরাহকে]
এএফসির (AFC Cup) ম্যাচ খেলার জন্য অন্যান্যবারের মতো এবারেও বাইপাসের ধারে সেই একই পাঁচ তারা হোটেলে রয়েছে এটিকে মোহনবাগান। যেখানে কলকাতায় আইএসএলের ম্যাচ খেলার সময়েও থাকতেন রয় কৃষ্ণরা। ইভানকার সঙ্গে তাঁদের পোষ্য সারমেয়কে নিয়ে টিম হোটেলে ঢুকতে গিয়েই সমস্যায় পড়লেন সন্দেশ জিঙ্ঘান। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল, সারমেয় নিয়ে হোটেলে থাকা যাবে না। সন্দেশ যদি টিম হোটেলে থাকে, তাহলে সারয়েমকে নিয়ে ইভানকাকে অন্য হোটেলে থাকতে হবে। আর ইভানকা যদি সন্দেশের সঙ্গে টিম হোটেলে থাকেন, তাহলে তাঁদের সারমেয়কে ক্রেশে থাকতে হবে।
তাঁদের প্রিয় সারমেয়কে ক্রেশে রাখতে কিছুতেই রাজি হননি সন্দেশ। তারউপর কলকাতায় নিয়ে এসেও রোজ সারমেয়কে দেখতে পারবেন না, এটাও মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাহলে উপায়?
তাঁর পোষ্য সারমেয়টিকে নিয়ে সমস্যার কথা এটিকে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টকে খুলে বললেন সন্দেশ।
টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পারে, সমস্যাটা সত্যিই গুরুতর। তখন ঠিক হয়, টিম হোটেলে না থেকে ইভানকা আর সারমেয়কে নিয়ে অন্য জায়গায় থাকবেন সন্দে। কিন্তু দল প্র্যাকটিসে যাওয়ার আগেই টিম হোটেলে চলে আসতে হবে। হোটেল থেকে টিম বাসে পুরো দলের সঙ্গে প্র্যাকটিসে যেতে হবে। আবার প্র্যাকটিস শেষেও টিম বাসে দলের সঙ্গে হোটেলে ফিরে সেখান থেকে ইভানকা আর সারমেয়র কাছে ফিরে যাবেন সন্দেশ। এই শর্তেই টিম হোটেলে না থেকে সন্দেশকে টলিক্লাবে থাকতে অনুমতি দিয়েছে এটিকে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্ট। এদিন প্রথম প্র্যাকটিসে নামার আগে শর্ত মতো, টিম বাস ছাড়ার আগে টিম হোটেলে চলেও আসেন দলের তারকা ডিফেন্ডার।
মঙ্গলবার এএফসি কাপে এটিকে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ শ্রী লঙ্কার ব্লুস্টার এফসি। আশা করা হচ্ছে, ভিসা পেয়ে গেলে রবিবারই কলকাতায় চলে আসবে তারা। কলকাতায় থাকবে এটিকে মোহনবাগানেরই টিম হোটেলে। এদিন প্রথমবারের জন্য প্র্যাকটিসে নেমে বল নিয়ে কিছু করেননি সন্দেশ। তার জায়গায় মাঠের পাশে নিজের মতো করে স্ট্রেচিং করেন তিনি।
এএফসির নিয়ম মতো চারজন বিদেশি ফুটবলার খেলানো যাবে। সেক্ষেত্রে রয় কৃষ্ণ, কাউকো, হুগো বুমোস এবং তিরি অটোমেটিক চয়েস। কার্ল শহরে আসবেন ১০ এপ্রিল। ফলে ১২ এপ্রিল তিনি যে ম্যাচ খেলতে পারবেন না, বলাই বাহুল্য। সেই কারণেই শ্রীলঙ্কার ব্লুস্টার এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার জন্য সন্দেশকে দ্রুত তৈরি হতে হবে।