দুলাল দে: ইচ্ছে পরের মরশুমের জন্য সন্দেশ জিঙ্ঘানকে (Sandesh Jhinghan) লাল-হলুদ জার্সি পরানো। কিন্তু যতক্ষণ না কোচ নিয়ে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সন্দেশকেও খেলার জন্য প্রস্তাব দিতে পারছেন না ইস্টবেঙ্গল কর্তারা।
পরের মরশুমের কোচ হিসেবে আপাতত শুধু সের্জিও লোবেরোর (Sergio Lobera) দিকেই তাকিয়ে আছে লাল-হলুদ। তিনি ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেবেন কি না, তা জানানোর জন্য লাল-হলুদ কর্তাদের কাছে কিছুদিন সময় চেয়ে নিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচ হওয়া নিয়ে যতদিন না তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত সন্দেশের সঙ্গে কথাও বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, এই মরশুমের দলগঠন করতে বসে লাল-হলুদ কর্তারা ঠিক করে ফেলেছেন, আগে কোচ নির্বাচন। তারপর কোচের সঙ্গে পরামর্শ করে পরের মরশুমের দল গঠন। আর কোচের ক্ষেত্রেও আগে সের্জিও লোবেরো। তিনি রাজি না হলে তখন অন্য কেউ।
[আরও পড়ুন: স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে হাওড়া, অশান্তির ঘটনার তদন্তভার নিল সিআইডি]
মোহনবাগান (Mohun Bagan) থেকে বেঙ্গালুরুতে যাওয়া ভারতীয় দলের স্টপার সন্দেশ এই মুহূর্তে ফ্রি ফুটবলার। সুপার কাপের পরই বেঙ্গালুরুর (Bengaluru FC) সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাবে ভারতীয় দলের এই অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিফেন্ডারের। আর ভাল দল গড়ার জন্য ইস্টবেঙ্গল কর্তারা নজর রাখছেন আইএসএলে (ISL) ভাল মানের ফ্রি ফুটবলারদের। সেক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় সন্দেশ এক নম্বরে। তবে আইএসএলের বাজারে সন্দেশের এই মুহূর্তে যা বাজারদর, তাতে তাঁকে লাল-হলুদ জার্সি পরাতে চাইলে কিন্তু ভালই আর্থিক চাহিদা মেটাতে হবে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের।
এই মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসির সঙ্গে সন্দেশের আর্থিক চুক্তি ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার। ফলে দলে নিতে হলে এর বেশি টাকা দিতেই হবে ইস্টবেঙ্গলকে। এরসঙ্গে আবার অন্য চাপও রয়েছে। বেঙ্গালুরু পরের মরশুমেও রাখতে চাইছে সন্দেশকে। তবে এখনও আর্থিক জায়গায় একমত হতে পারেনি দু’পক্ষ। বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি এফসি গোয়া এবং ওড়িশা এফসিও নিতে চাইছে সন্দেশ জিঙ্ঘানকে। ভারতীয় দলের (Indian Football Team) ডিফেন্ডার অবশ্য এখনও পর্যন্ত কাউকেই চূড়ান্ত সম্মতি দেননি। ফলে কোচ চূড়ান্ত হওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল কর্তারা সন্দেশের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। কিন্তু সন্দেশের যে বিশাল আর্থিক দাবি মেটাতে হবে, সেটা সবাই বুঝে গিয়েছেন। আর এই প্রসঙ্গে এক কর্তা বলছেন, ‘‘তাহলে যে আনোয়ার আলিকে মোহনবাগান তুলে নিয়েছে, তাঁর আর্থিক চাহিদা সম্পর্কে কী বলবেন?’’
মিনার্ভা পাঞ্জাব থেকে লোনে আনোয়ার আলিকে নেওয়ার সময় এফসি গোয়া ৪০ লক্ষ টাকা লোন ফি দিয়েছিল মিনার্ভা পাঞ্জাবকে। এবার সেই আনোয়ার আলিকে এফসি গোয়া (FC Goa) থেকে চার বছরের জন্য লোনে নিতে মিনার্ভা পাঞ্জাবকে সাড়ে তিন কোটি টাকা দিতে হচ্ছে মোহনবাগানকে। আর তারজন্য চার বছরের চুক্তিতে ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির জন্য মোহনবাগান মোট খরচ করছে ১১ কোটি টাকা! ভারতীয় ফুটবলে চমকে দেওয়ার মতো আর্থিক চুক্তি। লিস্টন কোলাসোর সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মোহনবাগানকে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। ফলে সন্দেশও আর কম টাকায় খেলতে রাজি হচ্ছেন না। চুক্তির ক্ষেত্রে সবার আগে গুরুত্ব দিচ্ছেন আর্থিক চুক্তিকেই। তবে লোবেরো কোচ হলে সন্দেশের ব্যাপারটা বদলেও যেতে পারে। এই আশায় রয়েছেন লাল-হলুদ কর্তারাও।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে বিপত্তি, নৌকাডুবিতে মৃত্য়ু ভারতীয় পরিবার-সহ ৮ জনের]
কিন্তু মোহনবাগানে হুগো বুমোসের ভবিষ্যৎ কী? অনেকে বলছেন, সের্জিও লোবেরো ইস্টবেঙ্গলে পাকা হলে বুমোসেরও (Hugo Boumos) সবুজ-মেরুন ছেড়ে লাল-হলুদে আসার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে মোহনবাগান কর্তারাও হুগো বুমোসের ব্যাপারটা কোচের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। এমনিতে ফেরান্দোর সঙ্গে মোহনবাগানের যা চুক্তি ছিল, তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাঁকেই কোচ রাখার কথা। আর ছেড়ে দিতে চাইলে বেশ ভালই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাই ধরেই নেওয়া যায়, আইএসএল (ISL) চ্যাম্পিয়ন কোচ ফেরান্দোই থাকবেন পরের বছর। মোহনবাগান কর্তারা বলছেন, সুপার কাপ শেষ হলে আগে কোচের সঙ্গে চুক্তি হবে। তারপর ফুটবলারদের।