মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: প্রথমেই একটা কথা বলে রাখতে চাই। চারদিকে শুনতে পাচ্ছি যে, আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ছয়ে থাকার রাস্তা ক্রমেই কঠিন হচ্ছে। আচ্ছা বলুন তো, প্রথম ছয়ে না থাকতে পারলে কোন ইস্টবেঙ্গলের কোন ক্ষতিটা হয়ে যাবে? এমন তো নয় যে আগের বছরগুলোতে দারুণ পারফর্ম করে ইস্টবেঙ্গল নকআউট রাউন্ডে খেলেছে! আর এবার তো নকআউটে জিতলে মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার স্লটও পাওয়া যাবে না। সে স্লট ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল পেয়ে গিয়েছে, সুপার কাপ জিতে।
তাই ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) প্রথম ছয়ে শেষ করার ব্যাপারটাকে আমি বিশেষ পাত্তা দিতে চাই না। তবে ম্যাচটা যখন ডার্বি, তখন জেতার একটা বাধ্যবাধকতা থেকেই যায়। সেটা ইস্টবেঙ্গল হোক বা মোহনবাগান (Mohun Bagan), দু’তরফেই থাকে। কারণ বড় ম্যাচ মানেই বাঙালির আবেগ। কোটি কোটি সমর্থক চায়, তার প্রিয় দল এই ম্যাচটা জিতুক। সেই আবেগের দাম দেওয়ার যে চাপ থাকে ডার্বিতে, সেটা নতুন কিছু নয়। ইস্টবেঙ্গল এই মুহূর্তে একটু নড়বড়ে অবস্থায় আছে। শেষ কয়েকটা ম্যাচে ওদের পারফরম্যান্স একেবারেই ভালো হয়নি। বিশেষত জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে যেভাবে এগিয়ে থেকে হারল, দেখে খুব খারাপই লেগেছিল। আমি বলব, ওই হারটাই প্রথম ছয়ের দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল।
[আরও পড়ুন: ডার্বিতে নামার আগেই আইএসএলের প্লে-অফে মোহনবাগান, এবার লক্ষ্য শীর্ষস্থান, বলছেন হাবাস]
সেখানে আন্তোনিও লোপেজ হাবাস কোচ হয়ে আসার পর ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়েছে মোহনবাগানের। হাবাস দক্ষ কোচ। আগে রক্ষণ সামলায়, তারপর আক্রমণে যায়। এবার কোচ হিসাবে একটু বেশি আক্রমণাত্মক খেললেও রক্ষণ ঠিক রাখার কাজটায় কোনও ফাঁক রাখছে না। জুয়ান ফেরান্দোর আমলের সঙ্গে এটাই তফাত। ফেরান্দো আক্রমণে জোর দিতে গিয়ে রক্ষণটা দুর্বল করে ফেলত। শেষ কয়েকটা ম্যাচ মোহনবাগানের দাপটের সঙ্গে জয়টা দেখলেই দুই কোচের আমলে তফাতটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
বর্তমানে দুই দলের যা হাল, তাতে মোহনবাগানকে একটু এগিয়ে রাখতেই হচ্ছে। তাছাড়া শেষ সাক্ষাতের ড্র বাদ দিলে, লিগে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে সব ম্যাচ জেতার রেকর্ডটাও ওদের সঙ্গী। তাই আবেগের লড়াই হলেও ম্যাচটা শুধু আবেগে ভর করতে জিততে পারবে না ইস্টবেঙ্গলকে। জিততে হলে হাবাসের ট্যাকটিক্সকে ছাপিয়ে যেতে হবে। এমন নয় যে, কার্লেস কুয়াদ্রাতের দলের সেই ক্ষমতা নেই। ক্লেটন সিলভার মতো অসাধারণ ফরোয়ার্ড আছে দলে, যে দু’টো সুযোগ পেলে একটা গোল করবেই। লালচুংনুঙ্গা, মহেশ সিংও ধীরে ধীরে ফর্মে ফিরছে। মোহনবাগানের থেকে কম হলেও ইস্টবেঙ্গলের জেতার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু শুধু আবেগ দিয়ে সেই কাজটা করা যাবে না।