সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি শান্ত শিল্পী। ক্লাব হোক বা দেশ, যে পর্যায়েরই খেলা হোক না কেন, সচরাচর মেজাজ হারাতে দেখা যায় না লিও মেসিকে। বিপক্ষের খেলোয়াড়দের চোখে চোখ রেখে কথা পর্যন্তও বলতে দেখা যায় না তাঁকে। সেই মেসি মেজাজ হারালেন বিশ্বকাপের ম্যাচে। ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বেশ অশ্বস্তিকর এ দৃশ্য। তাজ্জব আর্জেন্টিনার অধিবাসীরাও।
পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ ছিল। জাতীয় সংগীত চলার সময়ই রগ ধরে ঘষছিলেন। শোনা যাচ্ছিল, এর আগে নিজের রুম থেকে বেরোননি। এমনকী ফাদার্স ডে-র দিন কোচ সাম্পাওলি বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিলেও লিও নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছিলেন। তবু পৃথিবী তো বদ্ধ নয়। পর্তুগালকে পরের ম্যাচে রোনাল্ডো জিতিয়েছেন এ খবর হয়তো তার কাছে নিশ্চিতই পৌঁছেছিল। পৌঁছেছিল যে মারাদোনা তাঁর পাশেই শেষমেশ দাঁড়িয়েছিলেন। পেনাল্টি মিস করা নিয়ে কাঠগড়ায় তোলেননি। ফলত আর একবার দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার চাপ ছিল। ক্লাবে তিনি ফুটবলের ভগবান, আর দেশের হয়ে খেললেই সমর্থকদের নাস্তিক হতে হয়, এই অপবাদ বোধহয় ঘোচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাটাবেন কী করে! দলের ছকই বোধহয় কারও কাছে স্পষ্ট ছিল না। বক্সের আশেপাশে সমানে ঘুরে গেলেন। কিন্তু কারও থেকে সেরকম পাশই এল না। এমনকী খেলাটা যে তৈরি করবেন সেরকম সুযোগও এল না। তবু তিনি বড় খেলোয়াড়। সবাই চাইবে সব প্রতিকূসতা সত্ত্বেও তিনিই উদ্ধার করবেন, দেখা দেবেন ত্রাতা হয়ে। কিন্তু দিনের শেষে ফুটবল টিম গেম। ফলে লিওকেও আটকে যেতে হয়। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে বারবার সেরকম ঘটনাই ঘটছিল। হার্ড ট্যাকলের মুখে তো পড়ছিলেনই। একসময় তাই শান্ত মেসিও মেজাজ হারালেন। ক্রোয়েসিয়ার ডিফেন্ডার ইভান স্ট্রিনিচের সঙ্গে খানিকটা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বাধা দেওয়ার পর মেসি রাগত চোখে স্ট্রিনিচের দিকে তাকান। সামনে মেসিকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমাও চেয়ে নেন জিফেন্ডার। মেসির অবশ্য রাগ পড়েননি। একটা সময় দেখা যায় স্ট্রিনিচের একটা পা ধরে আছেন মেসি স্বয়ং। স্পষ্টতই তখন রেগে গিয়েছেন তিনি। এমনকী ম্যাচে মধ্যে আরও একবার রাগে হাত ছুড়তে দেখা গেল তাকে।
[ লিও মেসি, অন্য কোনওদিন শুনিও তোমার রূপকথার গল্প… ]
এই লিওকে দেখতে অভ্যস্ত নন তাঁর ফ্যানেরা। বার্সায় যে মেজাজ হারাননি তা নয়। তবে কদাচিত সে ঘটনা ঘটেছে। বড় মঞ্চে সাধারণ তাঁকে তাততে দেখা যায় না। বরং যত বাধা আসে, ব্লকিং হয়, তত ড্রিবলেই জবাব দেন মেসি। অভাবিত ফিনিশিংয়ে বুঝিয়ে দেন তিনি মেসি। তিনি যা পারেন তা আর কেউ পারেন না। কিন্তু টিম গেমে দল যদি সামগ্রিকভাবে ব্যর্থ হয় তবে এহেন প্লেয়ারকেও বাস্তবের মাটিতে আছড়ে পড়তে হয়। মেসিও পড়লেন মেজাজও হারলেন। রেফারি অবশ্য এ ঘটনাকে সাধারণ ঘটনা হিসেবেই মেনে নিয়েছেন। ফুটবলে আকছার এ জিনিস হয়। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে মেসি জড়িয়েই বলে অবাক হচ্ছেন তাঁর ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে চর্চা। কতটা চাপে থাকলে, দলকে কতটা ছন্নছাড়া দেখলে মেসির মতো শান্ত খেলোয়াড়রাও যে মেজাজ হারান তারই বিশ্লেষণ চলছে নেটদুনিয়ায়।
The post মাঠে মেজাজ হারাচ্ছেন মেসি, অস্বস্তিকর দৃশ্যে তাজ্জব ফুটবলপ্রেমীরা appeared first on Sangbad Pratidin.