আর্জেন্টিনা: ২ (মেসি, ফার্নান্ডেজ)
মেক্সিকো: ০
দুলাল দে, দোহা: পারবেন তিনি ঠিক পারবেন। সব প্রতিকূলতাকে হারিয়ে মাটি ভেদ করে তেড়েফুঁড়ে উঠবেন তিনি। এত সহজে তিনি হার মানতে পারেন না। তিনি হারলে যে ঈশ্বর হেরে যাবেন। এত আনন্দ আয়োজন যে সবই বৃথা হয়ে যেত মেসি (Leo Messi) ছাড়া! তাই তো তাঁকে জিততেই হবে। মনের কোণে এই বিশ্বাসে ভর করেই শনিবার গভীর রাতে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার লড়াই দেখতে বসেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। না, এদিন আর সেই বিভীষিকাময় আরব্য রজনীর পুনর্জন্ম ঘটেনি। মেক্সিকোকে মাটি ধরিয়ে মৃতপ্রায় ফুটবল পাগলদের অক্সিজেন জুগিয়েছে মারাদোনার দেশের জয়। মেসি ম্যাজিকে আরও একবার বিভোর গোটা বিশ্ব।
সৌদি আরবের (Saudi Arab) বিরুদ্ধে ভীষণ কুঁকড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল মেসিদের। জয়ের সেই খিদেটাই অনুভূত হয়নি। তবে এদিন মরণবাঁচন লড়াইয়ে শুরু থেকেই নিজেদের উজার করে দিয়েছিলেন স্কালোনির ছেলেরা। এই ছন্দেই তো মেসিদের দেখতে চেয়েছিলেন দর্শকরা। তবে মেক্সিকোও যেন প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিল, বিনাযুদ্ধ এক ইঞ্চি মেদিনীও ছাড়বে না। তাই বারংবার হানা দেয় ডি মারিয়াদের (Di Maria) ডেরায়। প্রথমার্ধেই জোড়া ফ্রি কিক থেকে গোলের সুবর্ণ সুযোগ আসে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ফ্রি কিক থেকে প্রায় নিখুঁতভাবে বল জালের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন ভেগা। কিন্তু আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্টিনেজের উড়ন্ত গ্লাভস আটকে দেয় নিশ্চিত গোল। গোলশূন্য ভাবে শেষ হয় প্রথমার্থ।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় মমতা-শুভেন্দু সাক্ষাৎ নিয়ে জোর জল্পনার মাঝেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য দিলীপ ঘোষের]
তবে খেলা জমে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। ম্যাচের দখল নেয় লা আলবিসেলেস্তা। এই অর্ধেই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যার জন্য চারটে বছর অপেক্ষায় ছিল ফুটবল দুনিয়া। আর্জেন্টিনার (Argentina) জার্সিতে বিশ্বকাপের মঞ্চে মেসিকে গোল করতে দেখা। গত ম্যাচেও তাঁর পা থেকে গোল এসেছিল। তবে পেনাল্টি কিক থেকে। কিন্তু এদিন দুই ডিফেন্ডার ঘোল খাইয়ে গোল করে দলকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করলেন সেই চেনা মেসি। যিনি হাজার সমালোচিত হলেও জানেন, দেশ তাঁর কাছে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। মারাদোনার মৃত্যুর পরের দিন তাঁর রেকর্ড স্পর্শ করলেন এলএম টেন। ফুটবলের রাজপুত্রর মতোই এদিন বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) ২১তম ম্যাচ খেলেন তিনি। আর সেই সঙ্গে অষ্টম গোলটি করেন। বিশ্বকাপে সমসংখ্যক ম্যাচে মারাদোনার পাশেও লেখা আটটি গোল। অনিশ্চয়তার গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি থেকে টেনে আর্জেন্টিনার সমর্থক তথা গোটা বিশ্বকে এক আকাশ রোদ্দুর উপহার দিলেন মেসি। এই জন্যই আপনি এক এবং অদ্বিতীয় হয়ে থাকবেন।
[আরও পড়ুন: DA ইস্যুতে সরকারি কর্মচারীদের পাশেই আছে সরকার, দাবি দুই মন্ত্রীর]
মেক্সিকোর কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন ফার্নান্ডেজ। তিন পয়েন্ট ঘরে তুলে বিশ্বকাপের নটআউটে পৌঁছনোর পথ প্রশস্ত করলেন।