সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশাখাপত্তনমে ‘যশস্বী ভব’। এছাড়া আর কীইবা বলা যাবে। বিশাখাপত্তনমে প্রথম দিনের শেষে যশস্বী জয়সওয়ালই নায়ক। তিনিই রক্ষাকর্তা। মসিহা। তিনিই অকুলের কুল, অগতির গতি, অনাথের নাথ। প্রথম দিনের শেষে যশ-লাভ যশস্বীর। দিনের শেষে তিনি অপরাজিত ১৭৯ রানে। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৭১ রান করেছিলেন ভারতের ওপেনার। শুক্রবার বিশাখাপত্তনমে যশস্বী জীবনের সেরা টেস্ট ইনিংস খেললেন। থুড়ি একটু ভুল হয়ে গেল। খেলে চলেছেন। দ্বিতীয় দিনের সকাল থেকেও তিনি যে সামলাবেন ইংল্যান্ড বোলারদের। ফলে যশস্বী ম্যাজিক আবারও দেখা যাবে। প্রথম দিনের শেষে ভারতের (Indian Cricket Team) রান ৬ উইকেটে ৩৩৬। দিনের শেষের দিকে আউট হলেন ভরত (১৭)। প্রথম দিনের শেষে জয়সওয়ালের সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন অশ্বিন (৫)। ইংল্যান্ডের স্পিনার শোয়েব বশিরকে নিয়ে চর্চা হয়েছিল। সেই বশির নামলেন দ্বিতীয় টেস্টে। দিনের শেষে তাঁর নামের পাশে লেখা ২ উইকেট।
ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) মানেই অভিষেকে সেঞ্চুরি। অভিষেক ম্যাচ হলে অন্য অবতারে ধরা দেন তিনি। শতরান হাঁকান যশস্বী। সেই যশস্বী জয়সওয়াল ইংল্যান্ডের (England Cricket Team) বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ৯৪ থেকে ছক্কা হাঁকিয়ে শতরানে পৌঁছন যশস্বী। তবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনমের দ্বিতীয় টেস্ট যশস্বীর অভিষেক টেস্ট ম্যাচ নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল ভারতীয় ওপেনারের। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে শতরান হাঁকিয়েছিলেন যশস্বী। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে বিশাখাপত্তনম–যশস্বীর যশ-লাভ চলছেই।
[আরও পড়ুন: ডার্বি-পুজোয় গায়ে ওঠে নতুন জামা, শিবপুরের ত্রিদীপের ভালবাসার পৃথিবীর রং সবুজ-মেরুন]
ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৮০ রান করেছিলেন যশস্বী। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য ব্যর্থ হন তিনি। দ্বিতীয় টেস্টে (IND vs ENG) যশস্বী জয়সওয়াল ভারতীয় ইনিংসকে টানলেন। বিশেষ করে ৮৯ রানে ২ উইকেট চলে যাওয়ার পরে যশস্বী ও শ্রেয়স আইয়ার ভারতের ইনিংসকে মজবুত করার চেষ্টা করলেন। ইংল্যান্ড বোলারদের সামলে যশস্বী ১৫১ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান। অবশ্য সেঞ্চুরি করার পথে যশস্বীর ক্যাচ পড়ে। জীবন ফিরে পান তিনি। জীবন ফিরে পেয়ে যশস্বী জয়সওয়াল তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছন।
শুক্রবার টস জিতে ভারত প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। যশস্বী ও রোহিত ৪০ রান জোড়ার পরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ভারত অধিনায়ক। প্রথম টেস্টে হারের পরে রোহিত শর্মার ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করেছিলেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা জেফ বয়কট। বলেছিলেন, রোহিত এখন অতীতের ছায়া। দ্বিতীয় টেস্টেও রোহিত কিন্তু নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন না। নবাগত বোলার বশিরের শিকার হন ভারত অধিনায়ক। শুভমান গিল ফের ব্যর্থ হন। অ্যান্ডরসনের বলে ফেরেন তিনি। তার পরে ভারতীয় ব্যাটিংকে টেনে নিয়ে যান যশস্বী।
যশস্বী মানেই ম্যাজিক। যশস্বী মানেই তাঁর গাণ্ডীব ঘুরিয়ে সেঞ্চুরি আর সেঞ্চুরি। ২০২২-এর সেপ্টেম্বরে দলীপ ট্রফিতে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি পান তিনি। সেই বছরেরই নভেম্বরে ইন্ডিয়া এ দলের হয়ে অভিষেক হয় যশস্বীর। সেই ম্যাচেও শতরান পান যশস্বী। ২০২৩-এ ইরানি ট্রফিতে অভিষেক ম্যাচে আবার ডাবল সেঞ্চুরি করেন। গতবছর ওয়েস্টে ইন্ডিজের মাটিতে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করেন যশস্বী। তার পরে এই বিশাখাপত্তনমে সেঞ্চুরি। প্রতিপক্ষ বদলে যায়, খেলার ভেন্যু বদলে যায়, অভ্যাস বদলায় না যশস্বীর। সেঞ্চুরি করেন তিনি। সেঞ্চুরিতেই তাঁর মোক্ষলাভ। সেঞ্চুরিতেই যশ লাভ হয় জয়সওয়ালের।
যশস্বী ছাড়া বাকিরা সেভাবে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি। ক্রিজে জমে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। না হলে আরও কেউ হয়তো দীপ জ্বালতে পারতেন বিশাখাপত্তনমের প্রথম দিনে। তাই বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে যদি বিচার করা হয়, তাহলে বিশাখাপত্তনমে প্রথম দিনের শেষে স্বস্তি ও অস্বস্তি দুই-ই দেখা গেল ভারতের সাজঘরে।