সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়: মায়াবী ইডেনে (Eden Gardens) কি আরও একবার জ্বলে উঠবেন আন্দ্রে রাসেল? যদি ওঠেন, তাহলে কেমন হয়? ক্রিকেটের নন্দনকাননের সবুজ গালিচায় কি আরও একটা রূপকথার নতুন অধ্যায় লিখবেন রিঙ্কু সিং? যদি লেখেন, তাহলে কেমন হয়? রূপসী ইডেনে বর্ণালি স্পিনের আরও একবার মায়াজাল বিস্তার করতে পারবেন বরুণ চক্রবর্তী? যদি পারেন, তাহলে কেমন হয়?
ইডেনের সমোষ্ণ বাতাসে এমন কৌতূহলী প্রশ্নের আনাগোনা বিস্তর। গ্যালারির কোণে আলোচনা প্রচুর। সঙ্গে আশা-আশঙ্কার দোলাচলতা। কারণ যে সহজ। বৃহস্পতিবার আরও একটা মরণ-বাঁচন ম্যাচ। যে ম্যাচে প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালসকে (Rajasthan Royals) হারাতেই হবে কেকেআরকে। হবেই। নচেৎ এবারের মতো প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন স্বখাতসলিলে। সেই পদস্খলন ঠেকাতে জয় ছাড়া যে ভিন্ন উপায় নেই নাইটদের।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকে বিজেপি হারলে এগোতে পারে লোকসভা ভোট! কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলেরও সম্ভাবনা]
ঘরের মাঠে গুজরাত টাইটান্সের (Gujarata Titans) কাছে হারের পর একটা পথই খোলা ছিল চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত-নীতীশ রানার কেকেআরের সামনে। হয় বাকি পাঁচ ম্যাচ জিতে প্লে-অফের ছাড়পত্র ছিনিয়ে নাও। নতুবা, হারের গোলকধাঁধায় ট্রফি জয়ের স্বপ্নে যবনিকা পড়ে যাবে। কেকেআর (KKR) অবশ্য সঠিক দিশা বেছে নিয়েছে অচিরেই। তাই তো পরপর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও পঞ্জাব কিংস ম্যাচ জিতে ধূসর হতে বসা প্লে-অফের স্বপ্ন ফের উজ্জ্বল দেখাচ্ছে নাইটদের। কিন্তু কাজ যে শেষ হয়ে যায়নি। বাকি তিন ম্যাচের তিনটেই যে জিততে হবে নীতীশ (Nitish Rana), জেসন রয়দের। তাই স্বপ্ন আছে, আর তার সঙ্গে আছে শঙ্কাও। সেই আশা-আশঙ্কার পৃথিবীতে কেকেআরের ভরসা আর কেউ নন-ওই আন্দ্রে রাসেল, রিঙ্কু সিং, বরুণ চক্রবর্তীরা।
[আরও পড়ুন: এক সপ্তাহে তৃতীয়বার, ফের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির চত্বর, গ্রেপ্তার ৫]
ফর্মের কক্ষচ্যুত ক্যারিবিয়ানকে নিয়ে যে উদ্বেগের সঞ্চার ঘটেছিল নাইট শিবিরে, পাঞ্জাব ম্যাচে তা সটান গঙ্গায় নিক্ষেপ করেছেন দ্রে রাস। টুর্নামেন্টের ‘বিজনেস এন্ডে’ এসে মহাতারকার ফর্মে ফেরাটা নাইট শিবিরের জন্য যতটা আনন্দের, ততটাই উদ্বেগের রাজস্থান রয়্যালসের জন্য। যে কথা সাংবাদিক সম্মেলনে এসে স্বীকারও করে গেলেন ট্রেন্ট বোল্ট, আরেক ‘প্রাক্তন নাইট’। বললেন, “টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে রাসেল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ক্রিকেটার। ৬০০-র বেশি সিক্সার মারার নজির রয়েছে ওর নামের পাশে। অবশ্যই ওকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তবে একা রাসেল নয়, কেকেআর টিমটায় বিগ হিটারের অভাব নেই। ওদের রিঙ্কু আছে, নীতীশ আছে। প্রত্যেকেই যথেষ্ট ভাল প্লেয়ার।”
বোল্টের অনুমান অব্যর্থ। একা রাসেল নন, রিঙ্কু আছেন। আর আছেন বলেই এখন নিভু নিভু প্লে-অফের আশার প্রদীপে স্ফুলিঙ্গ দেখার অপেক্ষায় কেকেআর অনুরাগীরা। ২২ গজের মতো সাংবাদিক সম্মেলনেও তাই প্রচণ্ড ‘ফোকাসড’ দেখাল রিঙ্কুকে। কেকেআরের রূপকথার নায়ক বলে গেলেন, “প্লে-অফে খেলতে গেলে আমাদের বাকি তিনটে ম্যাচেই জিততে হবে। আমরা একটা একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই। তাই এখন রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ জেতা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।”
তবে সানরাইজার্স আর পাঞ্জাবকে হারানো এক, আর রাজস্থানকে (Rajasthan Royals) হারানো আরেক ব্যাপার। কারণ ধারে এবং ভারে আইপিএলের অন্যতম শক্তিশালী সঞ্জু স্যামসনের টিম। দলে ব্যাটিং-বোলিং দু’দিকের ভারসাম্যও দারুণ। শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হারলে কী হবে, ছন্দে আছেন জস বাটলার থেকে যশস্বী জয়সওয়াল, সঞ্জু স্যামসনরা। আর বোলিং? ‘গুরুবারে’ ইডেনের ২২ গজে অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে দু’দলের স্পিন দ্বৈরথ। একদিকে, বরুণ-নারিন-সুয়াস। অন্যদিকে, অশ্বিন-চাহাল-জাম্পা। ইডেন তুমি আজ নাইটদের হাত ধরবে না?
আজ আইপিএলে
কেকেআর বনাম রাজস্থান রয়্যালস
কলকাতা, সন্ধ্যা ৭.৩০
স্টার স্পোর্টস