সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব-বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। তারই শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হল ২৬ বছরের ইরানের ফুটবলারকে। যে খবর সামনে আসার পরই উত্তাল গোটা বিশ্ব। শিউরে উঠছেন বিক্ষোভকারীরাও।
‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে জেহাদ’ ঘোষণার ফল যে কী মারাত্মক হতে পারে, সেটাই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন ইরানের জাতীয় যুব দলের প্রাক্তন ফুটবলার আমির নাসর-আজদানি। রাহ-আহান তেহরান এফসি, ট্রাক্টর এসসি, গোল-ই-রায়ানের মতো ইরানের প্রিমিয়ার লিগ দলগুলিতেও খেলেছেন তিনি। কিন্তু দেশে চলতে থাকা হিজাব বিরোধী বিক্ষোভকে সমর্থন করতেই শেষ চূড়ান্ত শাস্তির মুখে পড়লেন আমির। তাঁর অপরাধের নাম ‘মোহারাবেহ’। ইংরাজিতে যার মানে ‘ওয়েজিং ওয়ার আগেইনস্ট গড’। অর্থাৎ সরকারের বিরোধিতা। আর তাতেই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হল তাঁকে।
[আরও পড়ুন: ‘১২ ডিসেম্বর লালন শেখের মৃত্যু হবে, জানত শুভেন্দু’, হাজরার সভায় বললেন চন্দ্রিমা]
জানা গিয়েছে, আমিরের বিরুদ্ধে কর্নেল চেরাগি এবং দুই ইসলামপন্থী নিরাপত্তারক্ষীকে খুনেরও অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁর সাজা ঘোষণার পাশাপাশি এই মামলাতেও ট্রায়াল চলবে বলে খবর। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে শামিল হয়ে এর আগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন মোশেন শেকারিও (২৩)। তাঁর বিরুদ্ধে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ তুলেছিল ইরান পুলিশ। এক প্যারামিলিটারি কর্মীকে আহতও করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ করা হয়। এবার দেশের মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়ে শাস্তি ভোগ করছেন আমির।
উল্লেখ্য়, বছর বাইশের মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে এখনও উত্তাল ইরান। নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি ওই তরুণীকে মারধর করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আক্রান্ত হন হৃদরোগে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। রাজপথে নেমে আসে কাতারে কাতারে মানুষ। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করা শুরু হয়। সেই বিক্ষোভের আঁচ পড়ে কাতার বিশ্বকাপেও। আন্দোলনকে সমর্থন করে এক ম্যাচে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানের তারকারা। যদিও তাতে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের।