সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে অন্তত ৫০০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একটি সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেছেন কাতার বিশ্বকাপের প্রধান হাসান আল থ্বাদি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কিছুদিন আগেই হাসান বলেছিলেন বিশ্বকাপের জন্য মাত্র তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের মৃত্যু হয়ছে বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি-সহ একাধিক মানবাধিকার সংস্থা। তবে বারবার সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কাতারের প্রশাসনিক কর্তারা। মৃতের সংখ্যাও প্রকাশ করতে চাননি তাঁরা।
বিখ্যাত সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যানকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হাসান। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে কতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে? উত্তরে হাসান বলেন, “অন্তত ৪০০ জন। আমার হিসাব অনুযায়ী, ৪০০ থেকে ৫০০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে সঠিক সংখ্যাটা আমার জানা নেই।” প্রসঙ্গত, এই সাক্ষাৎকারের আগে হাসান দাবি করেছিলেন, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে মাত্র তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৩৭ জনের।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানে পা দিয়েই অজানা ভাইরাসে কাবু ইংল্যান্ডের একঝাঁক ক্রিকেটার, অনিশ্চিত প্রথম টেস্ট]
ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাতারে কাজ করতে যান। বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পরে কাতারের ভোল পালটে গিয়েছে। নতুন স্টেডিয়াম, ঝকঝকে পথঘাট-বিশ্বের দরবারে সুনাম কুড়াতে দেশকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলেছে কাতার প্রশাসন। একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, এই কাজ করতে অমানুষিক পরিশ্রম করানো হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ সাল থেকে অন্তত ১৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
কাতারে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়েই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি। তবে এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল কাতার প্রশাসনের বিরুদ্ধে। চলতি বিশ্বকাপ ঘিরে একাধিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা, সমকামিতাকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা-মানবাধিকার বিরোধী একাধিক অভিযোগ উঠেছে কাতারের বিরুদ্ধে। এবার বিশ্বকাপের প্রধানের মুখে শ্রমিক মৃত্যু নিয়ে এমন মন্তব্যের পর আরও বিতর্কে জড়িয়ে গেল কাতার।