সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোহনবাগানের (Mohun Bagan) নাম পরিবর্তন নিয়ে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে যাচ্ছেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। এবার আন্দোলন ময়দানের তাঁবু ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্তর (Debasis Dutta) বাড়ির সামনে। রবিবার বেশ কিছু সমর্থক মোহনবাগান সচিবের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তবে শুধু সচিব নন, সবুজ-মেরুন সমর্থকরা সভাপতি টুটু বোসের নাম করেও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। আর তাতেই এদিন মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষে সহ-সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে, আমাদের সচিব এবং সভাপতির নামে। জনসমক্ষে যেভাবে সচিব এবং সভাপতির নামে কটু মন্তব্য করা হয়েছে, তা কিছুতেই ক্লাব মেনে নেবে না। শতবর্ষ পার করা ক্লাবের সমর্থকদের থেকে এই ধরনের ব্যবহার কখনওই আশা করা যায় না।’
আর ঠিক এরপরেই ক্লাবের সহ-সচিব লিখেছেন, এটিকের সঙ্গে মোহনবাগানের মার্জারের সিদ্ধান্তটি ক্লাবের আগের কার্যকরী কমিটির সময়ে হয়েছিল। দেবাশিস দত্ত সেই সময় ক্লাবের সচিব পদে ছিলেন না। অর্থাৎ ঘুরিয়ে বলতে চেয়েছেন, সেই সময় ক্লাবের সচিব ছিলেন সৃঞ্জয় বোস (Srinjoy Bose)।
[আরও পড়ুন: জাতীয় গেমসের ফাইনালে কেরল-কাঁটা উপড়ে খেতাব জিততে মরিয়া বাংলা]
এদিন ক্লাবের তরফে এরকম প্রেস রিলিজের কথা জানতে পেরে বিস্মিত হয়ে পড়েন সৃঞ্জয় বোস। তিনিও পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘এটিকের সঙ্গে চুক্তিপত্রে মোহনবাগানের কোনও সচিব বা অর্থ সচিবের সই নয়, ছিল দু’জন ডিরেক্টরের সই। দেবাশিস দত্ত আর আমি দু’জনেই সই করেছিলাম, মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর হিসেবে। তার থেকেও বড় কথা, এটিকের সঙ্গে আলোচনার জন্য সেই সময়ের কার্যকরী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ক্লাবের তরফে পুরো ব্যাপারটা দেখবেন সৃঞ্জয় বোস এবং দেবাশিস দত্ত। ফলে উনি সেই সময় সচিব ছিলেন না বললেও দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাছাড়া সেই সময়ে যাঁরা ক্লাবের কার্যকরী কমিটিতে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখনও কার্যকরী কমিটিতে আছেন। এরপরেও ক্লাব কেন এরকম ভুল তথ্য সহ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে, কিছুতেই বুঝতে পারছি না। ক্লাব বোধহয় প্রেস রিলিজ দেওয়ার আগে তথ্যগত ব্যাপারে আরও একটু সতর্ক হতে পারত।’’
তবে এর পাশাপাশি মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বোস তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন, দেবাশিস দত্তর বাড়ির সামনে সমর্থকদের বিক্ষোভ প্রদর্শনে। তিনি বলেন, ‘‘ময়দানের কোনও প্রতিবাদ, ময়দান ছাড়িয়ে কখনওই কারও ব্যক্তিগত বাড়ির সামনে প্রদর্শন করাটা ঠিক নয়। ক্লাবের মতো আমিও সমর্থকদের এই আচরণের নিন্দা করছি।’ এরই সঙ্গে সৃঞ্জয় বোস তথ্য তুলে বলেন, ‘‘পদত্যাগ করার আগে আমি আর দেবাশিস দত্ত একসঙ্গে নাম পরিবর্তন ইস্যুতে ইনভেস্টর কর্তৃপক্ষর সঙ্গে আলোচনা করি। ক্লাব যদি চায়, আমি আজও যে কোনও আলোচনায় যেতে প্রস্তুত। সদস্য-সমর্থকরাই ক্লাবের মেরুদণ্ড। বিশ্বাস করি, তাঁদের আবেগ এবং চাহিদাকে ক্লাব এবং ইনভেস্টর কর্তৃপক্ষ যথাযথ সম্মান দেবে।’’
এ দিকে, এ দিন মোহনবাগানের বিবৃতি প্রসঙ্গে মোহনবাগানের সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এ দিন প্রচারিত মোহনবাগান ক্লাবের বিবৃতির বয়ানের সঙ্গে অনেকাংশেই একমত নই। এই বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে কোনও আলোচনা হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা ও পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে। ক্লাবের সদস্য, সমর্থকদের আবেগকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া তখনও প্রয়োজন ছিল, এখনও প্রয়োজন।’’
[আরও পড়ুন: আজ শুরু অনূর্ধ্ব ১৭ মহিলা বিশ্বকাপ, মার্কিন-যুদ্ধে এক পয়েন্ট চায় ভারত]