স্টাফ রিপোর্টার: আইএসএল (ISL) ম্যাচের জন্য আইএফএকে (IFA) আর টিকিট দেবে না মোহনবাগান। এদিন আইএফএকে চিঠি দিয়ে মোহনবাগানের (Mohunbagan) তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ময়দানের ক্লাবগুলিকে আইএফএ-র মাধ্যমে আর আইএসএলের টিকিট দেবে না তারা। এবার থেকে ক্লাবগুলিকে সরাসরি টিকিট পাঠাবে মোহনবাগান।
ডার্বি ম্যাচকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে ধুন্ধুমার কাণ্ড মোহনবাগান এবং আইএফএর মধ্যে। এদিন নৈহাটিতে আয়োজিত ডার্বিতে খেলতে যায়নি মোহনবাগান। অনান্য ক্লাব যেরকম খেলবে না, আগেই জানিয়ে দেওয়ায়, প্রতিপক্ষ ম্যাচের আগেই ওয়াকওভার পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু মোহনবাগান যেহেতু একবারও লিখিতভাবে জানায়নি যে ম্যাচটা তারা খেলবে না, তাই একবারের জন্য বলা যাবে না ইস্টবেঙ্গল ডার্বিতে ওয়াকওভার পেয়েছে। সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা মাঠে উপস্থিত না থাকায় রেফারি সেরকমই রিপোর্ট দেবে আইএফএ-র কাছে। এবার লিগ কমিটি সংবিধান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে যে ছয় পয়েন্ট কাটা যাবে না তার বেশি। তবে একটা ব্যাপারে এই মুহূর্তে কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন যেমন মহামেডান। তেমন এদিনের পর রানার্স ইস্টবেঙ্গল। তবে সরকারিভাবে আইএফএ ঘোষণা করবে লিগ সাব কমিটির মিটিংয়ের পরই। সঙ্গে পরিকল্পনা হয়েছে, ডিসেম্বরে কন্যাশ্রী কাপ শেষ হয়ে গেলে জানুয়ারিতে একসঙ্গে সব ক্লাবকে পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে এসবের মাঝেই এদিন মোহনবাগান এবং আইএফএ সচিবের মধ্যে একে অপরকে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের বর্ষণ চলল।
[আরও পড়ুন: দুবাইয়ে প্রধানমন্ত্রী, পা রাখতেই ‘অব কি বার মোদি সরকার’ স্লোগান, সেলফির হিড়িক প্রবাসীদের]
কেন মোহনবাগান আর আইএফএ-কে আইএসএলের টিকিট দেবে না, এই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘আমরা আইএফএ-কে টিকিট দিই ক্লাবগুলিকে বন্টন করার জন্য। ক্লাবগুলি আদৌ টিকিট পায় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। হয়তো আইএসএলের টিকিট নিয়েও রাজনীতি করে। সেই কারণেই এবার থেকে আমরাই ময়দানের ক্লাবগুলিকে সরাসরি টিকিট দেব।’’ এই প্রসঙ্গে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বললেন, ‘‘মোহনবাগানের পাঠানো টিকিট আমরা ক্লাবগুলিকে দিতাম। মোহনবাগান যদি এবার নিজেরাই সরাসরি ক্লাবগুলিকে টিকিট দিয়ে দেয়, আমরা তো খুশি। ক্লাবদের কোনও সমস্যা না হলে আমাদের কেন হবে?’’ তবে কথার গোলাগুলি ছোড়া এখানেই শেষ নয়। প্রয়াত মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র-র নাম উল্লেখ করে দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আইএফএ-র অপদার্থতার জন্য অনেক আগেই অঞ্জনদা কলকাতা লিগে না খেলে ঝাড়খণ্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা বলেছিলেন।’’ এই প্রসঙ্গে অনির্বাণ দত্ত বললেন, ‘‘মোহনবাগান যদি ঝাড়খণ্ডে গেলে সুবিধা হয়, যাবে। ওরা তো বেশ কয়েকবছর ধরে কলকাতা লিগ এমনিতেই খেলছে না। ময়দানের ক্লাবগুলির জন্যই আইএফএ। কিন্তু কোনও একটি ক্লাবের ইচ্ছামতো আইএফএ চলতে পারে না। তাহলে তো এবার থেকে সবক’টি ক্লাব ঠিক করে দেবে, কবে কখন লিগের ম্যাচ খেলবে। এভাবে আইএফএ চলতে পারে না। আমরা বহুবার মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি ম্যাচের দিন জানার জন্য। এখন বলছে, ডিসেম্বরের শেষে গিয়ে খেলবে। এভাবে একটা ম্যাচের জন্য একমাস লিগ আটকে রাখা যায় না। মহামেডান অনেকদিন ধরে জানতে চাইছে কবে লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি পাবে।’’
মোহনবাগান এদিন না খেলায় শাস্তির প্রসঙ্গ উঠলে দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘কীসের শাস্তি? মোহনবাগানকে বাদ দিয়ে লিগ, শিল্ড করে দেখাক না আইএফএ। যদি দম থাকে মোহনবাগানকে শাস্তি দিয়ে দেখাক। আমার আর বিনয় চোপড়ার মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করতে গিয়েছিলেন আইএফএ সচিব। উনি জানেন না আমার যা কথা, সেটা বিনয়ের কথা। আর যেটা বিনয়ের কথা, সেটা আমার কথা।’’ মোহনবাগান সচিবের হুঙ্কারে পাল্টা দিলেন আইএফএ সচিবও। বলেন, ‘‘আইএফএ চলবে নিজের সিদ্ধান্তে। কোনও একটি ক্লাবের পরামর্শে নয়।’’এদিন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত আরও প্রশ্ন তোলেন, “আইএফএ-র সংবিধানকে মাথায় রেখেই বলছি, লিগের মাঝখানে ইস্টবেঙ্গলকে কীভাবে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে খেলার অনুমতি দেওয়া হল?” এর উত্তরে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “আইএফএ-র অধীনে তিনশোর কাছাকাছি ক্লাব আছে। প্রত্যেকটি ক্লাব যদি টুর্নামেন্ট খেলতে যায় তা হলে তিনশোটা গভর্নিং বডি রাখতে হয়। এটা কী সম্ভব?” এদিকে, গড়াপেটা নিয়ে মদন মিত্র অভিযোগ সংক্রান্ত ব্যাপারে শুক্রবারই হয়তো তদন্ত কমিটি গঠন করবে আইএফএ।