সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলা কুস্তিগিরদের দিনের পর দিন ধরে যৌন হেনস্তা করেছেন জাতীয় কোচ ও ফেডারেশনের কর্তারা- বিস্ফোরক দাবি করলেন কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat)। বুধবার এই অভিযোগ এনে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন কুস্তিগিররা। সেখানে শামিল হয়েছেন অলিম্পিক পদকজয়ী সাক্ষী মালিক (Sakshee Malikkh), যোগেশ্বর দত্ত (Yogeshwar Dutt), বজরং পুনিয়ার (Bajrang Punia) মতো কুস্তিগিররাও। যৌন হেনস্তার পাশাপাশি কুস্তিগিরদের উপর মানসিক নির্যাতন চালানোরও অভিযোগ আনা হয়েছে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট (WFI) ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, তিনি উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ। তাঁর মতে, এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হবেন।
বুধবার যন্তরমন্তরে ৩১ জন কুস্তিগির ধরনায় বসেন। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভিনেশ বলেন, “মহিলাদের হেনস্তা করছেন জাতীয় দলের কোচরা। ফেডারেশনের প্রিয়পাত্র এই কোচরা প্রত্যেক মহিলার সঙ্গেই অশালীন আচরণ করে। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট নিজেও একাধিক মহিলাকে যৌন হেনস্তা করেছেন।” কথা বলার সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারকা মহিলা কুস্তিগির।
[আরও পড়ুন: ফের বিতর্কে দ্যুতি চাঁদ, ডোপ পরীক্ষা ফেল করে নির্বাসিত ভারতীয় অ্যাথলিট]
ক্রীড়াবিদদের ব্যক্তিগত জীবনেও হস্তক্ষেপ করেছে ফেডারেশন, এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন ভিনেশ। তাঁর মতে, লাগাতার হেনস্তার শিকার হয়ে একটা সময়ে আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন চুপ করে থাকতে বাধ্য হন। ভিনেশের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর কাছেও এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি। তারপর সমস্যা সমাধান হওয়া দূর, তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বিজেপি সাংসদ তথা ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকলে মিলে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রসঙ্গত, ব্রিজ ভূষণ সিং প্রায় দশ বছর ধরে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে কুস্তি প্রশাসনের শীর্ষে বসেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের কাইজারগঞ্জের বিজেপি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ভিনেশের দাবি, “আমরা যখন অলিম্পিকে গিয়েছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোচ বা ফিজিও কেউই ছিলেন না। কিন্তু নিজেদের দাবির কথা জানালেই আমাদের মুখ বন্ধ করতে হুমকি দেওয়া হত।” অবিলম্বে ফেডারেশন কর্তার পদত্যাগ দাবি করেছেন কুস্তিগিররা। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়ালও যন্তর মন্তরে গিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন।