সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুপুরেই সেঞ্চুরিয়ন টেস্ট খেলে উঠেছিলেন। আর রাতেই কিনা টেস্টকে বিদায়! ক্রিকেটবিশ্বে এহেন ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার ব্যাটার কুইন্টন ডি’কক (Quinton de Kock) ঠিক সেটাই করে বসলেন। বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরিয়ন টেস্ট খেলে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যে ঘোষণা করে দিলেন, আর টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন না তিনি। বরং পরিবারকে আরও বেশি করে সময় দিতে চান। আর এই ঘটনাই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে করিয়ে দিল মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা।
আসন্ন পিতৃত্বের কারণে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট যে খেলবেন না, আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন ডি’ কক। কিন্তু লক্ষ্মীবার তিনি ঘোষণা করে দেন যে, আর খেলবেনই না টেস্ট! দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের এক বিবৃতিতে ডি’কক বলেছেন, “আমার পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব সহজ ছিল না। আমি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক বার ভেবেছি। ভেবেছি, আমার আগামী জীবন কেমন হবে? আমি জীবনে কোন কোন জিনিসকে প্রাধান্য দেব? কারণ, খুব তাড়াতাড়ি আমি বাবা হচ্ছি। আমার কাছে আমার পরিবারই সব। তাই জীবনের একটা নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাই।”
২০১৪ সালে বক্সিং ডে টেস্ট শেষে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরই টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ধোনি (MS Dhoni)। ‘ক্যাপ্টেন কুলে’র আচমকা ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছিল গোটা বিশ্ব। ৭ বছর পর সেই ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটল সেঞ্চুরিয়নে। তাই দুই উইকেটকিপার ব্যাটারকে এক সুতোয় এদিন বেঁধে দিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন নেটিজেনরা। অনেকেই লেখেন, দু’জনের দুই তারকার অদ্ভুত সমাপতন।
[আরও পড়ুন: ‘বিশ্বের সেরা তিন পেসারের তালিকায় থাকবে ও’, টেস্ট জিতে শামির প্রশংসায় পঞ্চমুখ কোহলি]
তবে টেস্ট ছাড়লেও সাদা বলের ক্রিকেট ছাড়ছেন না উনত্রিশ বছরের প্রোটিয়া কিপার। বলেছেন, “আমি টেস্ট ক্রিকেটকে ভালবাসি। কিন্তু জীবনে এমন একটা জিনিস আমি এখন পেয়েছি, যা টেস্ট ক্রিকেটের থেকেও বেশি দামী। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা ছাড়ছি না। সাদা বলের ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাব। যত দিন খেলব, নিজের সেরাটাই দেব।”
ডি’ ককের চলতি বছরের শুরুটা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার অস্থায়ী টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মোট চার টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্ব দেন তিনি। আর বছর শেষে সেই ডি’কক টেস্ট ক্রিকেটই ছেড়ে দিলেন! মাঝে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় ডি’ককে নিয়ে একপ্রস্থ বিতর্কও হয়। বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দেশীয় ক্রিকেটারদের ম্যাচ শুরুর আগে হাঁটু মুড়ে বসার নির্দেশিকা দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড। কিন্তু ডি’কক তো শোনেনইনি সেই নির্দেশ, উলটে সেই ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। পরে যদিও কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন ডি’কক।