স্টাফ রিপোর্টার: ড্রেসিংরুমের সামনেই বিশাল স্টেজ। সামনেই চেয়ারে বসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। সিএবির (CAB) সমস্ত বর্তমান-প্রাক্তন কর্তাদের উপস্থিতি। রয়েছে পুরো বাংলা (Bengal) টিম। কিন্তু এটা তো উৎসব নয়। বরং বঙ্গ ক্রিকেটের কাছে এক ভারাক্রান্ত সন্ধ্যা। এদিনের পর থেকেই যে মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) নামের পাশে একটা শব্দ জুড়ে গেল-প্রাক্তন।
কুড়ি বছরের সুদীর্ঘ কেরিয়ার। যার শুরুটা হয়েছিল ইডেনেই। শেষটারও সাক্ষী হয়ে থাকল ইডেন। বিহারকে হারিয়ে সাত পয়েন্ট পাওয়ার পরই ইডেনের বাইশ গজে চুমু খেলেন মনোজ। অনেক স্মৃতি। হাজারো নস্ট্যালজিয়া। সে’সবই ভিড় করে আসছিল মনোজের মনে। মাঝে মধ্যেই কেঁদে ফেলছিলেন। বঙ্গ ক্রিকেটের এক যোদ্ধার অবসরের দিনটা যে আবেগঘন হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
[আরও পড়ুন: পরপর ডবল সেঞ্চুরি করা যশস্বীর কাছে কোন বিশেষ অনুরোধ করলেন অনিল কুম্বলে?]
সৌরভের যেমন মনোজের সঙ্গে রনজি ফাইনালের সেই স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খুব বেশি খেলা হয়নি মনোজের। কিন্তু সে’সব দিয়ে মনোজ তিওয়ারিকে যে বিচার করা যাবে না, সেটা বলে গেলেন সৌরভ। বলছিলেন, “মনোজ কতগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে, সেটা দিয়ে ওকে বিচার করতে যাবেন না। দীর্ঘ কুড়ি বছর যেরকম ক্রিকেট খেলে গিয়েছে, সেটা আজীবন মনে রেখে দেবে বাংলা ক্রিকেট। বাংলা ক্রিকেট যতদিন থাকবে, ততদিন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থেকে যাবে মনোজ।”
লক্ষ্মীও একইরকম আবেগপ্রবণ। দীর্ঘসময় ধরে মনোজের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে শেয়ার করেছেন। সেই সব মুহূর্তের কথা বলে যাচ্ছিলেন। অনুষ্টুপ মজুমদার আবার আগ্রাসী ব্যাটিংটাই শুরু করেন মনোজকে দেখে। মনোজের আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে অনুষ্টুপ বুঝেছিলেন এই পর্যায় যদি কর্তৃত্ব করতে হয়, তাহলে আগ্রাসী ব্যাটিংটা করতেই হবে।
সিএবির তরফ থেকে বিশেষ এক ভিডিওর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যেখানে দীপ দাশগুপ্ত, রোহন গাভাসকর থেকে শুরু করে হরভজন সিং, মহম্মদ শামি, প্রত্যেকেই শুভেচ্ছা জানান মনোজকে। একইসঙ্গে তাঁদের আর্জিও থাকল-মনোজ যেন ক্রিকেটের সঙ্গেই যুক্ত থাকেন। মনোজের পুরো পরিবার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানান তিনি। সিএবির তরফ থেকে সোনার ব্যাট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় মনোজকে। আর বারবারই আবেগে ভেসে যাচ্ছিলেন বঙ্গ অধিনায়ক।
জীবনে হয়তো সবকিছুই থাকবে। শুধু সামনে বছর থেকে রনজির টিম লিস্টে মনোজ তিওয়ারির নামটা আর লেখা থাকবে না।