স্টাফ রিপোর্টার: অপ্রত্যাশিত। জীবনের শেষ Olympics-এ শূন্য হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে মেরি কমকে। কলম্বিয়ার প্রতিপক্ষ ইনগ্রিট ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-৩ ফলে হারার পরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (IOC) টাস্ক ফোর্সের বিপক্ষে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ছ’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, সম্পূর্ণ ভুল বিচারের শিকার হলেন তিনি। শুধু তাই মেরি কমের আরও অভিযোগ, ম্যাচ শুরুর মাত্র এক মিনিট আগে তাঁকে পোশাক বদলাতে বাধ্য করা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কিংবদন্তি বক্সারের প্রশ্ন, “কেউ কি আমায় বলতে পারবে, আমার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের এক মিনিট আগে কেন আমাকে জার্সি বদলাতে হল?”
আসলে, মেরি কমের (Mary Kom) জার্সির পিছনে তাঁর নাম ‘মেরি কম’ লেখা ছিল। কিন্তু অলিম্পিকের আয়োজকদের দাবি, অলিম্পিকের জার্সিতে শুধু প্রথম নাম লেখা যায়। পদবি লেখা যায় না। যে কারণে, ম্যাচ শুরুর এক মিনিট আগে তাঁকে জার্সি বদলে নামহীন জার্সি পরতে হয়েছে। যা ম্যাচে মেরি কমের মনঃসংযোগে প্রভাব ফেলেছে, সেটা বোলার অপেক্ষা রাখে না। কোয়ার্টার ফাইনালের ফলাফল নিয়েও এদিন বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন মেরি। রেকর্ড বলছে, ইনগ্রিটের বিপক্ষে কোনওদিন হারেননি মেরি কম। দু’বারের লড়াইয়ে দু’বারই তিনি জিতেছেন। আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থাকে আর্থিক অনিয়মের কারণে বাতিল করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। ফলে টোকিওতে বক্সিং প্রতিযোগিতা পরিচালনা করছে টাস্ক ফোর্স। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া টেলিফোনের এক সাক্ষাৎকারে মেরি কম বলেছেন, “এই সিদ্ধান্তের মাথামুন্ডু মাথায় ঢুকছে না। টাস্ক ফোর্স এমন ভুল করতে পারে?” প্রশ্ন তোলার পর তিনি নিজেই বলতে থাকেন, “টাস্ক ফোর্সের আমি একজন সদস্য ছিলাম। স্বচ্ছতা তুলে ধরার জন্য আমার বেশ কিছু পরামর্শ ছিল। অথচ আমার সঙ্গেই কিনা এমন ব্যবহার করা হল?” ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া মেরি কম ভেবেছিলেন, টোকিও (Tokyo) থেকে পদক নিয়ে ফিরবেন। কিন্তু যখন জানতে পারেন তিনি হেরে গিয়েছেন তখন তাঁর আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়। “রিংয়ের ভিতরে যখন ছিলাম তখন ভালই লাগছিল। বাইরে আসার পরেও আনন্দেই ছিলাম। আসলে জানতাম আমি জিতেছি। ডোপিং টেস্ট করতে যাওয়ার সময় অন্যকিছু ভাবিনি। ভালই লাগছিল। সোশ্যাল মিডিয়া ও কোচ বলার পর আমি সম্পূর্ণ অবাক হয়ে যাই। এই মেয়েটাকে (ইনগ্রিট) দু’বার হারিয়েছি। এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, রেফারিরা তার হাত উপরে তুলে ধরেছে। হারার জন্য আমাকে আঘাত করছে না। কারণ আমিই তো জিতেছি।”
[আরও পড়ুন: Tokyo Olympics: দুর্দান্ত লড়াইয়ের পরও হার মেরি কমের, শেষ আরও একটি পদকের আশা]
প্রথম রাউন্ডে মেরি কম ৪-১ পিছিয়ে ছিলেন। পাঁচজনের মধ্যে চারজন বিচারকের স্কোরে ১০-৯ এগিয়ে যান ইনগ্রিট ভ্যালেন্সিয়া। পরবর্তী দু’রাউন্ডে পাঁচজনের মধ্যে তিনজন বিচারক মেরি কমের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু পয়েন্টের নিরিখে পিছিয়ে পড়েন মণিপুরি বক্সার। ফাইনাল বা চূড়ান্ত রাউন্ডে মেরি কমের প্রয়োজন ছিল ৪-১ এগিয়ে থাকা। তাই মেরি কম ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, “মুশকিল কী জানেন, এখানে প্রতিবাদ জানানো বা রিভিউ করার কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে বিশ্বের সকলে এই লড়াই দেখেছে। বিচারকরা যা করেছে বিশ্ববাসী দেখে থাকবে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আমি পুরোপুরি তাঁকে উড়িয়ে দিয়েছি। অথচ কিনা স্কোর হল ৩-২? তাই এখানে যা ঘটেছে তা অবিশ্বাস্য।”