সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেনায় ডুবে ভেঙে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। গত সাত দশকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। আজই ব্যাপক ধসের সম্মুখীন হয়ে বন্ধ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার শেয়ার বাজার। তার মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) কাছে ‘যত বেশি সম্ভব’ সাহায্যের আবেদন করলেন শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলনেতা (Opposition Leader) সাজিদ প্রেমাদাসা। ভারতের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কায় ৪০ হাজার টন চাল পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। শ্রীলঙ্কাকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ভারত। খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করার জন্যই এই ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। প্রসঙ্গত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের (S Jaishankar) সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন মোদি।
শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলনেতা প্রেমাদাসা বিশেষ বার্তা দিয়েছেন মোদির উদ্দেশে। তিনি বলেছেন, “দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আপনাদের পক্ষে যতটা সম্ভব আমাদের পাশে দাঁড়ান।” দেশের এহেন বিপর্যয়ে বিরোধী দলনেতার আবেদন, “আমাদের মাতৃভূমি এই দেশ। শ্রীলঙ্কাকে রক্ষা করতেই হবে আমাদের।” আর্থিক সংকট সামলাতে না পেরে একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কা মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী। সেই ঘটনাকে ‘লোক ঠকানো নাটক’ বলে অভিহিত করেছেন সাজিদ প্রেমাদাসা। শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলনেতা মনে করেন, “পদত্যাগ করে দেশের মানুষের দুরবস্থার সুরাহা হবে না। জনগণকে বোকা বানাতেই পদত্যাগ করেছে মন্ত্রিসভা।”
[আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বেনজির অর্থনৈতিক সংকট, ইস্তফা দিল গোটা মন্ত্রিসভা, কোণঠাসা ‘চিনপন্থী’ রাজাপক্ষে]
চিনকে অনৈতিক ভাবে আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে, এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। অতিরিক্ত চিন নির্ভরতার কারণেই আজকের এমন বেহাল অর্থনৈতিক দশা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “শ্রীলঙ্কার মানুষ আমূল পরিবর্তন চান। জনগণ আশা করেন এমন ব্যবস্থা হবে যার ফলে রাজনৈতিক নেতারা নন, জনতা লাভবান হবেন।”
শ্রীলঙ্কায় চাল ও গম বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি ২২০ টাকা ও ১৯০ টাকা কেজি দরে। চিনির দাম ২৪০ টাকা কেজি। নারকেল তেলের দর ৮৫০ টাকা প্রতি কেজি। একটি ডিমের দাম ৩০ টাকা। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর আগেই জানিয়েছিলেন, ভারত রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে। সাজিদ প্রেমাদাসার এহেন মন্তব্যের পরে ভারত কীভাবে শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করে, তারই অপেক্ষায় দ্বীপরাষ্ট্র।