সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় মৎস্যজীবীদের (Fishermen) একটি দলের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল শ্রীলঙ্কার নৌসেনার (Lanka Navy) বিরুদ্ধে। রবিবার তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) রামেশ্বরমের মৎস্য বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, নৌসেনা আচমকাই পাথর ছুঁড়তে থাকে। এর ফলে অন্তত ৬০টি মাছ ধরার বোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছিঁড়ে গিয়েছে ২৫টি বোটের সঙ্গে থাকা মাছ ধরার জাল।
রবিবার মৎস্য বিভাগের এক প্রতিনিধি সংবাদমাধ্যমকে এবিষয়ে জানাতে গিয়ে বলেন, শনিবার গভীর রাতে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল ৫৫৬টি বোট। তখনই পাঁচটি বড় বোট বা ভেসেলে করে শ্রীলঙ্কার নৌসেনা টহল দিতে বেরিয়েছিল। ভারত-শ্রীলঙ্কার জলসীমান্তের কাছে ভারতীয় বোটগুলিকে দেখতে পেয়ে হামলা চালায় তারা। ছুঁড়তে থাকে পাথর। এতে বোট কিংবা জালের ক্ষতি হলেও কোনও মৎস্যজীবী আহত হননি বলেই জানা গিয়েছে।
মৎস্যজীবীদের সংগঠনের প্রতিনিধি এস এমেরিটের দাবি, শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) নৌসেনা কিছু বোটকে লক্ষ্য করেই পাথর ছুঁড়ছিল। এই ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি কেন্দ্র ও তামিলনাড়ু সরকারের কাছে আরজি জানিয়েছেন, এব্যাপারে পদক্ষেপ করার।
[আরও পড়ুন: অন্য রাজ্যের তুলনায় কম তামিলনাড়ুর লোকসভা আসন, কেন্দ্রের কাছে ‘ক্ষতিপূরণ’ দাবি মাদ্রাজ হাই কোর্টের]
শ্রীলঙ্কার নৌসেনার এমন আচরণ কিন্তু নতুন কিছু নয়। এর আগেও বারবার এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই মাসের গোড়াতেও ভারতীয় মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে বোতল ও পাথক ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।
ইতিহাস সাক্ষী, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মৎস্যজীবীরা দু’দেশের জলসীমা পেরিয়ে মাছ ধরতে যেত। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর বিশেষ করে এলটিটিই-র পরাজয়ের পর থেকেই শ্রীলঙ্কা সরকার তাদের জলসীমায় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। একসময় তামিলনাডুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা শ্রীলঙ্কাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, একটি চুক্তির বিষয়ে। যার দ্বারা তামিলনাডুর মৎস্যজীবীরা আইনত ভাবেই শ্রীলঙ্কার জলসীমায় মাছ ধরতে যেতে পারত। ভারতীয় ভাগের জলপ্রান্তে মাছের সংখ্যা কম বলেই এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: Kalyan Singh-এর প্রয়াণে ৩ দিনের শোক উত্তরপ্রদেশে, শ্রদ্ধা জানাতে লখনউতে PM Modi]
প্রসঙ্গত, এই রাজ্যের প্রায় দু’ লক্ষ মৎস্যজীবীকে গ্রাসাচ্ছেদনের জন্য মাছ ধরার উপরেই নির্ভর করতে হয়। তাঁদের অন্য কোনও স্থায়ী বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা নেই। এদিকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চিনের সম্পর্ক ক্রমেই ভালো হয়েছে বিগত কয়েক বছরে। চিন সেদেশে নানা বিনিয়োগ করেছে। ফলে কূটনৈতিক ভাবেই চাপ বেড়েছে ভারতের উপরে। আর ক্রমেই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে তামিলনাডুর মৎস্যজীবীদের সংকট দূর করার বিষয়টি।