সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চমক দিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার! কখনও ছক ভাঙা চরিত্রে চমকে দিয়েছেন দর্শকদের তো কখনও বা নিন্দা-কটাক্ষের মুখে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে কথা বলেছে তার পারফরম্যান্স। আবার কখনও বা প্রতিপক্ষের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন বন্ধুত্বের হাত! অনুরাগীদের কাছে দেব এমনভাবেই পরিচিত। তবে এবার ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’র ট্রেলার লঞ্চের দিন টলিউড সুপারস্টার যা করলেন তা দেখে নিন্দুক, সমালোচকদের প্রায় ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়!
দ্বন্দ্ব রেষারেষি ভুলে ডেকে নিলেন আরেক ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও তাঁর গোটা টিমকে। প্রথমবার একইমঞ্চে টলিপাড়ায় দুই ব্যোমকেশকে দেখার সাধ মিটল অনুরাগীদের। আর দেবের ডাকে সাড়া দিয়েই ‘দশম অবতার’ ছবির শুটিং ছেড়ে বিরসা দাশগুপ্তর ব্যোমকেশের প্রচারে হাজির হলেন পরিচালক ‘মুখুজ্জ্যেমশাই’। যিনি কিনা মাসখানেক আগেও দেবকে ব্যোমকেশ মানতে নারাজ ছিলেন। সেসব মান-অভিমান এখন অবশ্য অতীত! কারণ সম্প্রতি সৃজিতের ছবিতে দেব-রুক্মিণী জোড়ায় সই করেছেন।
এদিকে জোড়া ব্যোমকেশ-সত্যবতীকে একসঙ্গে পেয়ে আহ্লাদে আটখানা সকলেই! তবে সৃজিতের ‘অজিত’ রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেল না ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’র ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে। ব্যোমকেশের ভূমিকায় দেব অভিনয় করবেন শুনেই ব্যঙ্গ করেছিলেন যিনি। তবে টলিউড সুপারস্টার এপ্রসঙ্গে কোনওরকম প্রতিবাদ না করলেও দেবের হয়ে জবাব দিলেন তাঁর ‘অজিত’ অম্বরীশ ভট্টাচার্য। বললেন- “আমি ফাটিয়ে দিয়েছি। সেই ভয়েই বোধহয় রাহুল আজ এখানে আসেনি।”
তবে দেবের ডাকে সাড়া দিয়ে ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে হাজির হলেও নিজের অবস্থান কিন্তু পরিষ্কার করে দিয়েছেন সৃজিত। বললেন, “একটাই ব্যোমকেশ করব ভেবেছিলাম। হয়ে গেছে। এরপর আমি আর ব্যোমকেশ করব না। ফেলুদা, কাকাবাবুকে নিয়ে কাজ করব। কিন্তু ব্যোমকেশ নয়। আর আমি যখন ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ চিত্রনাট্যের খসড়া লিখছিলাম তখন অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কথা ভেবেই লিখেছিলাম। আমি আবার অত সহজে মুখ চেঞ্জ করতে পারি না। হতেই পারে কেউ তার থেকে ভাল অভিনয় করল, কিন্তু ভাবনা বদল করার পক্ষপাতী আমি নই।”
[আরও পড়ুন: খুন-রহস্যের কিনারায় সত্যান্বেষী দেব, ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’র ট্রেলার আরও রোমাঞ্চকর]
পাশাপাশি দেবের প্রশংসা করে সৃজিত বলেন, “ট্রেলারটা আমার দারুণ লেগেছে। দেবের লার্জার দ্যন লাইফ ইমেজটা এই ছবিকে আরও লার্জার দ্যন লাইফ করে তুলেছে। শরদিন্দুবাবুর দুর্গরহস্য এমন ট্রিটেমন্ট ডিসার্ভ করে।” ওদিকে পরিচালকের সত্যবতী সোহিনী সরকার জানালেন, দেবের সঙ্গে দেখা হতেই তিনিই প্রথম রুক্মিণী মৈত্রকে সত্যবতীর ভূমিকায় কাস্ট করার কথা জানিয়েছিলেন। দেবও একথায় সায় দেন। বোঝাই গেল, পর্দার দুই সত্যবতীর মধ্যে কোনও ‘ক্যাটফাইট’ নেই! অনির্বাণের মুখেও দেবের প্রশংসা।
ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে নিন্দুকদের একহাত নিয়ে দেব এও বলেন যে, “আমি শুরু থেকেই ব্যোমকেশ নিয়ে ভয়ে ছিলাম। কারণ জানতাম আমি আকাশ-পাতাল এক করে দিলেও মানুষ আমার ব্যোমকেশ নিয়ে সমালোচনা করবেই। তবে আমার বিশ্বাস কঠিন হলেও অসম্ভব কিছুই নয়। ভাল হোক বা খারাপ আমি নিজের মতো করে চেষ্টা করেছি।” উল্লেখ্য, ব্যোমকেশ যুদ্ধের নিকেশ আগেই করেছেন দেব-সৃজিত। দুটো প্রজেক্ট মুক্তি পাচ্ছে আলাদা দুই প্ল্যাটফর্মে। সৃজিত পরিচালিত তথা অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনীত ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ পুজোয় মুক্তি পাবে হইচই-এর প্ল্যাটফর্মে। ওদিকে দেব-বিরসার ছবি ১১ আগস্ট আসছে প্রেক্ষাগৃহে। টলিউড সুপারস্টার দেব যে অভিনব পন্থায় নিন্দুকদের চুপ করালেন, তা বলাই বাহুল্য।