সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির যেসব শিক্ষকের চাকরি পরীক্ষার উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি। মোট ৯০৭ জন শিক্ষকের নাম ও চাকরির পরীক্ষার রোল নম্বর প্রকাশ করা হয়। তাঁরা সকলেই বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত।
গত বছরের জুলাই মাসে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) মামলা করেছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই চাকরির যোগ্য দাবিদার তিনিই, মন্ত্রীকন্যা ক্ষমতা দেখিয়ে তা দখল করেছেন। উচ্চ আদালতে ববিতার অভিযোগ প্রমাণের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি খারিজ হয় অঙ্কিতার। সেই জায়গায় চাকরি পান ববিতা। শুধু তাই নয়, অঙ্কিতার ৪৩ মাসের বেতনের টাকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই টাকা ববিতাকে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: চোখের চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক বিদেশ গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়]
ববিতা চাকরি পাওয়ার কয়েকমাস পর তাঁর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই পদের অন্যতম দাবিদার অনামিকা রায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ৬০ শতাংশ নয়। অথচ তিনি ৬০ শতাংশ লিখেছেন ফর্মে। তাতেই ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর বেড়ে গিয়েছে। হিসেবমতো ববিতার থেকে নম্বর বেশি অনামিকার। ফের শুরু হয় মামলা। যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ববিতা সরকারের সুপারিশপত্র বাতিল করে পর্ষদ। ফলে ববিতা সরকারও চাকরি হারান। সেই চাকরি পান অনামিকা রায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন ববিতা। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। তারই মাঝে ফের নতুন করে আদালতের দ্বারস্থ ববিতা সরকার। ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং বিস্তারিত মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানান তিনি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে ৯০৭ জনের বিকৃত উত্তরপত্র সিবিআই উদ্ধার করেছিল তা প্রকাশ করতে হবে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপত্র প্রকাশে স্থগিতাদেশ দেয়। শুধু শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই তালিকাই প্রকাশ করল এসএসসি।