গোবিন্দ রায়: CBI তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে হতাশার সুর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) গলায়। মঙ্গলবার হাই কোর্টের (Calcutta High Court) এজলাসে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথোপকথনেই সেই হতাশা প্রকাশ করলেন তিনি। বিচারপতির কথায়, “আমি ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রথম সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিছুই হল না। কোনও মেটেরিয়াল উদ্ধার করতে পারেনি তারা এখনও। আমি খুবই হতাশ।” সিবিআই আদৌ কিছু করতে পারবে কি না, তা নিয়েও সন্দিহান বিচারপতি।
সম্প্রতি রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) । রাজ্য পুলিশ, সিআইডির তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর ভরসা রাখতে পারেননি তিনি। সিট গঠনের প্রস্তাবও নাকচ করেছিলেন। এবার সেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর ভরসা হারাচ্ছেন খোদ সেই বিচারপতি। অন্তত তাঁর কথাবার্তায় সেই বিষয়টি উঠে এল।
[আরও পড়ুন: দলে ‘ব্রাত্য’ দিলীপ! বিজেপি মহিলা মোর্চার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতই নন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি]
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এই রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। এতগুলো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলাম, জানি না মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কোনও বার্তা পৌঁছেছে কিনা।” এরপরই হতাশ সুরে বিচারপতির মন্তব্য, “সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর গত সাত মাসে কিছুই হল না। এই দেশে কিছু পালটাবে না। আমি সত্যি বেশ উদ্বিগ্ন। গতকাল থেকে মনে সন্দেহ হচ্ছে, সিবিআই আদৌ কিছু করতে পারবে কিনা! বরং সিটকে দিলে ভাল হত।সিবিআইয়ের ম্যান পাওয়ার নেই।” এই সমস্ত তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত বিচারপতি। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে দোলাচলে ভুগতে থাকা বিচারপতি বলছেন, “আমি জানি না পরে কী করব? পরে এই ধরনের ম্যাটার এলে তদন্তের দায়িত্ব কাকে দেব? ভাবছিলাম সব মেটেরিয়াল নিয়ে অন্য কাউকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেব কিনা!”
এর পর বিচারপতির মন্তব্যকে সমর্থন করে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”সিবিআই মিডিয়ার সামনে চার-পাঁচ দিনের জন্য খুব বেশি হলে ১০ দিনের জন্য হইহই করবে। সারদা-নারদা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে কী লাভ হয়েছে? কিছুই হয়নি। প্রথম দু-চারদিন হইহই, তারপর সব যেমনকে তেমন। হতাশ হয়ে গিয়েছি এসব দেখতে দেখতে। সিবিআই মানে তিন-চারদিন ক্যামেরার সামনে খুব ফ্ল্যাশ। বাকি কিছু হয় না। বেশিরভাগ মামলায় তারা তদন্তই সম্পূর্ণ করতে পারে না।” হতাশ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমার ইচ্ছে নেই মিডিয়ায় রোজ আমার ছবি আসুক। কিন্তু এ রাজ্যের বেকার ছেলেমেয়েদের কী হবে?”