shono
Advertisement

ফের আদালতে কাঁদলেন পার্থ, এসএসসি দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীই, দাবি সিবিআইয়ের

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ফের জামিনের আরজি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
Posted: 02:45 PM Sep 16, 2022Updated: 03:41 PM Sep 16, 2022

অর্ণব আইচ: এসএসসি (SSC) নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শুক্রবার আলিপুরে অস্থায়ী আদালতে এমনটাই দাবি করলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এদিকে অসুস্থতার অজুহাতে ফের জামিনের আরজি জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিচারকের সামনে আবারও কেঁদে ফেললেন তিনি।

Advertisement

ইডির থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে সিবিআই। সেই কারণে শুক্রবার সশরীরে আদালতে হাজির করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। একই সঙ্গে আদালতে তোলা হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। আদালতে প্রবেশের পর সৌজন্য বিনিময় করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় (Kalyanmoy Ganguly)। পাশাপাশিই বসেছিলেন তাঁরা। শুনানি শুরুর আগে নিজের হাতে থাকা খাতা দেখিয়ে নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন পার্থ। এদিন আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই। জানা গিয়েছে, গ্রুপ সি নিয়োগের দায়িত্বে সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করেন তাঁরাই। সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, ২০১৬ সালে গ্রুপ সি-র পরীক্ষা হয়েছিল। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ফল। ২০১৯ সালের আগস্টে উত্তীর্ণদের কাছে পাঠানো হয় লিস্ট। সেপ্টেম্বর মাসে নাকি বেআইনিভাবে ৪০০ জনকে নিয়োগ করা হয় সুপারিশের ভিত্তিতে। সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির পিছনে রয়েছেন মোট ৫ জন। চারজন ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার আরজি জানান তাঁরা।

[আরও পড়ুন: নভেম্বরেই নবান্নে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ! মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা]

এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী শেখ সেলিম রহমান দাবি করেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় একজন মন্ত্রী, এমআইসি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে যা অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। তার কাজের এক্তিয়ার কতটা ছিল তাও তুলে ধরেন আইনজীবী। তাঁর কোনও ক্ষমতা ছিল না বলেও দাবি করেন। আইনজীবীর আরও দাবি, ইডি ও সিবিআই চক্রান্ত করছে। এদিন পার্থবাবুর আইনজীবী বলেন, ১৩ জুলাই থেকে ৩ বার তলব করা হয়েছে তাঁর মক্কেলকে। কিন্তু সেটা গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায়। কিন্তু সেই সময় গ্রুপ সি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। কিন্তু কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বন্দিদশার প্রায় ৬০ দিন হতে চলল, তা সত্ত্বেও ইডি কেন চার্জশিট পেশ করল না, সেই প্রশ্নও তোলা হয়। ইডি ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা করে সমস্ত নথি পেয়েছে, তাই নতুন করে সিবিআইয়ের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপরই সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ, তা গুরুতর। ফলে সমাজের ভালর জন্যই সিবিআই হেফাজতে যাওয়া প্রয়োজন পার্থকে। এরপরই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “নিয়োগের দায়িত্বে স্বশাসিত একটি সংস্থা। আমি তাতে ছিলাম না। তাই নিয়োগে আমার কোনও হাত নেই। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি যতদিন দায়িত্বে ছিলাম, কর্তব্যে গাফিলতি করিনি।” পাশাপাশি পার্থ ফের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আরজি করেন। জানান, তিনি প্রতিদিন ২৮ টি ওযুধ খান। আশ্বস্ত করেন যে, জামিন পেলেও কোথাও যাবেন না তিনি। এরপরই আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন তিনি।

এদিকে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, “ওনার স্ত্রী ডা. বিচিত্রা গঙ্গোপাধ্যায়। উনি প্রফেসর ছিলেন। পরবর্তীতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি হন। ওনার এতে কোনও যোগ নেই।” আদালতের তরফে বলা হয়, বেআইনি নিয়োগ পত্রে সই ছিল কল্যাণময়বাবুরই। সেই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির আইনজীবী বলেন, ”২০১৮ সালের পর থেকে যাবতীয় সই স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়। ফলে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় আদৌ গোটা বিষয়ে কিছু জানতেন কি না, সেটাই প্রমাণ সাপেক্ষ।” দুই পক্ষের মতামত শুনলেও এখনও রায় ঘোষণা করেনি আদালত। 

[আরও পড়ুন: মেলেনি চূড়ান্ত রিপোর্ট, টালা ব্রিজ উদ্বোধনে সময় পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা ফিরহাদ হাকিমের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement