অর্ণব আইচ: এবার আদালতে কেঁদে ফেললেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। কান্নাভেজা গলায় তাঁর আরজি, “আমাকে ছেড়ে দিন। প্রয়োজনে আমাকে ঘরবন্দি করে রাখুন কিন্তু জামিন দিন।” বুধবার ভারচুয়ালি আদালতে হাজির করা হয়েছিল এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রীকে। সেখানেই জামিনের জন্য কাতর আরজি জানান পার্থ। একইসঙ্গে উদ্ধার হওয়া সম্পত্তির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেন পার্থ।
এদিন আদালতে ইডির আইনজীবীরা জানান, পার্থ-অর্পিতার প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। কিন্তু এই সম্পত্তির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছেন পার্থ। তাঁর কথায়, “ইডি আধিকারিকরা আমার বিধানসভা কেন্দ্রে এসে দেখুন, আমি কে, আমার পরিবার কী, এত টাকা নিয়ে আমি কী করব? কোথা থেকে আসবে এত টাকা?” এরপরই আদালতে কেঁদে ফেলেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব। ধরা গলায় বলেন, “প্রয়োজনে আমাকে ঘরে আটকে রাখুন। বাড়িতে বন্ধ করে রাখুন। কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিন। আমাকে জামিন দিন।” বিচারপতি তাঁর আরজিতে সায় দেন কিনা সেটাই এখন দেখার।
[আরও পড়ুন: পার্থর জন্য দলের ক্ষতি হয়েছে, পরিষদীয় বৈঠকে বললেন ফিরহাদ, ভাবমূর্তি নিয়ে সচেতন শাসকদল]
এদিন ভারচুয়ালি হাজির করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। আদালতে স্পষ্ট জানান, তাঁর ফ্ল্যাটে টাকা কোথা থেকে এল, তা তিনি জানেন না। এজলাসে ভারচুয়ালি হাজিরা দিয়ে অর্পিতা জানান, “আমি জানি না, কী করে এমন হল?” বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেন, “আমার বাড়িতে কী হয়েছিল?” জবাবে অর্পিতা জানান, “ইডি যখন আমার ফ্ল্যাটে হানা দেয় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা আমি বেরতেই পারিনি। আমি ৪ ঘণ্টা ছিলাম বাথরুমে। বাকি সময় বেডরুমে ছিলাম। এত নগদ টাকা কী করে বেরল জানি না।” বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও ফ্ল্যাটে থাকা নগদ সম্পর্কে জানতেন না, অর্পিতার এমন দাবিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। বলেন, “আপনার ফ্ল্যাট অথচ সেখানে টাকা কীভাবে এল তা জানতেন না?” জবাবে অর্পিতা জানান, আমার নামে দু’টি এন্টারটেইনমেন্টের সংস্থা আছে। সেখান থেকেই আয়।”
এরপর মায়ের কথা উল্লেখ করেন অর্পিতা। বলেন, “মায়ের বয়স হয়েছে। বাবা চলে গিয়েছেন অনেকদিন।” বিচারপতি জানতে চান, অর্পিতা তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকেন কি না। জবাবে পার্থর বান্ধবী জানান, “কর্তব্যের খাতিরে আমাকে দক্ষিণ কলকাতায় থাকতে হয়। ওখানে আমার কাজকর্ম।” মায়ের কাছে না থাকলে, মায়ের কথা বলে জামিন চাইছেন কেন, অর্পিতার কাছে জানতে চান বিচারপতি। মায়ের অসুস্থতার যুক্তি দেন অর্পিতা। তবে এদিন তাঁর আইনজীবী জামিনের আরজি জানাননি।