ক্ষিরোদ ভট্টাচার্য: রাজ্যজুড়ে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা সংক্রমণ। মারণ ভাইরাসের কবলে পড়ছেন একের পর এক চিকিৎসক। যার প্রভাব এবার পড়ছে RT-PCR টেস্টের উপরও। সেই ছবিই উঠে এল এসএসকেএম হাসপাতালে। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যে টেস্ট করার লোকের অভাবে চূড়ান্ত সমস্যার সম্মুখীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে রোজ গড়ে ২ হাজার ৬০০টি করে টেস্ট হওয়ার কথা থাকে। কিন্তু গত তিনদিন ধরেই দেখা গিয়েছে সমস্যা। এমনকী যাঁরা ৫দিন আগে টেস্ট করিয়েছেন, তাঁরাও এখন রিপোর্ট হাতে পাননি। কারণ মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান রাজা রায় নিজেও করোনা পজিটিভ। তাঁর পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত আরও পাঁচজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। সংক্রমিত ল্যাব টেকনিশিয়ানরাও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অন্যান্য মাইক্রোবায়োলজিস্ট কিংবা যাঁরা স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করছেন, তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল, তাঁদেরও প্রতি মুহূর্তে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অশনি সংকেত দেখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: বিজেপি নেতাদের ‘বিদ্রোহ’ অব্যাহত! এবার যুব মোর্চার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন শঙ্কুদেব পাণ্ডা]
এই মুহূর্তে যাঁরা করোনা আক্রান্ত (Coronavirus), সাতদিন পর তাঁদের সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু তাঁদের কতজন নির্ধারিত সময়ে যোগ দিতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কারণ কো-মর্বিডিটি থাকলে সেরে উঠতে আরও খানিকটা বেশি লাগবে। তবে শুধুই এসএসকেএম নয়, একই অবস্থা এমআর বাঙ্গুর-সহ বিভিন্ন হাসপাতালের, যেখান থেকে RT-PCR নমুনা জমার পর রিপোর্ট তৈরি করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাত-আটটি হাসপাতালে রিপোর্ট পৌঁছে দিতে হয়। আবার জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর থেকেও প্রতিদিন প্রায় চারশো রিপোর্ট পাঠানো হয়। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরিষেবা স্বাভাবিক করতে ব্যাক-আপ হিসেবে ভাবা হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের কথা। সেখানকার পরিস্থিতি কলকাতার তুলনায় খানিকটা উন্নত বলেই এই ভাবনা।
নতুন বছরের গোড়া থেকেই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। যার জেরে নতুন করে কড়া হয়েছে বিধিনিষেধ। হাসপাতালগুলিকে নতুন করে প্রস্তুত করা হয়েছে করোনা মোকাবিলার জন্য। কিন্তু দিনের পর দিন চিকিৎসকরা কোভিড-১৯-এর কবলে পড়ায় চিকিৎসা পরিষেবায় ভাঙনের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।