দীপালি সেন: স্নাতক স্তরে কলকাতায় পড়াশোনা করছেন। মাঝপথেই অভিভাবকের দেশের অন্য শহরে বদলি হয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘মাল্টিপল এন্ট্রি-এগজিট’ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে পড়ুয়া সেই শহরে থাকা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন। অর্থাৎ, কোর্স চলাকালীনই কলেজ পরিবর্তন করতে পারবেন পড়ুয়ারা। দেশজুড়ে থাকা ৭৬টি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সঙ্গে মেলবন্ধন করে ২০২৬ সালের মধ্যে এই নয়া ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে আসন্ন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিস্তারিত তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জন ফেলিক্স রাজ। সেখানেই তিনি বলেন, “নতুন শিক্ষানীতিতে মাল্টিপল এন্ট্রি-এগজিট সুবিধার কথা বলা রয়েছে। তা এখনও চালু না হলেও আমরা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই ব্যবস্থাটি চালু করার কথা ভাবছি।” জাদবপুর র্যাগিং কাণ্ড প্রসঙ্গে এদিন উপাচার্য বলেন, “এহেন ঘটনায় ভিনরাজ্য থেকে বাংলায় পড়ুয়াদের আগমন ধাক্কা খাবে না। এতে বিশেষ প্রভাব পড়বে না।”
[আরও পড়ুন:পরিবারে বিয়ের সানাই, পাহাড়ি মেয়েকে ঘরে আনতে বরযাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন মমতা]
শুক্রবার উপাচার্য ফেলিক্স জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে, ২৫ নভেম্বর, রাজ্যসভার সাংসদ পি চিদাম্বরমের ‘দ্য ফিউচার অফ ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক ভাষণ। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তাঁর নিজের এবং অধ্যাপক প্রভাত কুমার দত্তের লেখা ‘ডেভলপমেন্ট, ডিসেন্ট্রালাইজেশন অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি’ নামক বইয়ের উদ্বোধন করবেন পি চিদাম্বরম। ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন। প্রধান অতিথি রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল তথা সিয়েরা লিওনির খ্যতনামা অর্থনীতিবিদ কান্দেহ কোল্লেহ ইয়মকেল্লা সশরীরে উপস্থিত হয়ে সমাবর্তন ভাষণ দেবেন। আইনজীবি আর এন জুনজুনওয়ালাকে সাম্মানিক ডিলিট ও লয়োলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা মাদ্রাস ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য বিজ্ঞানী এস ইগনাশিওমুথুকে সাম্মানিক ডিএসসি ডিগ্রি দেবে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। একইসঙ্গে সেন্ট জেভিয়ার্সের চতুর্থ সমাবর্তন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা ‘মাদার টেরেসা চেয়ার ফর পিস’ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু করা হবে। ফেলিক্স রাজ বলেন, “আমরা সরকারের থেকে অফিশিয়াল লেটার পেয়েছি। রাজ্য সরকার এর জন্য আমাদের বছরে ৩০ লক্ষ টাকা দেবে।”
[আরও পড়ুন: মেট্রোর কাজের জন্য আর কাটা যাবে না গাছ, কড়া নির্দেশ হাই কোর্টের]
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণে আরও জমির প্রয়োজন। তাই কাছেই থাকা প্রায় ১০.৭ একর জমি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং তৈরির কাজও চলছে। তাতে ২২৫টি ক্লাসরুম থাকবে। চার বছরের ইন্ট্রিগ্রেটেড বিএড, কর্মরতদের জন্য এগজিকিউটিভ এমবিএ-সহ একাধিক নতুন কোর্স চালুরও পরিকল্পনার কথা এদিন জানিয়েছেন উপাচার্য জন ফেলিক্স রাজ। তাঁর আশা, পরিকাঠামো বৃদ্ধি, নতুন নতুন কোর্সের হাত ধরে বর্তমানের সাড়ে ৩ হাজার ছাত্র সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ হাজারে পৌঁছে যাবে।