শুভঙ্কর বসু: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকা প্রস্তুতির কাজ চলছে। ১৮ নভেম্বর যার খসড়া প্রকাশ হবে। সেই কাজ কেমন চলছে তা হাতে-কলমে বুঝিয়ে দিতে ৯ নভেম্বর সবকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বৈঠকে তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ বা পরামর্শ শোনা হবে। এরপরই জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবে কমিশন। এর সঙ্গে সরাসরি ভোট প্রস্তুতির কোনও যোগ নেই বলে কমিশন দাবি করলেও এই ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই ২০২১-এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে হবে। ফলে একরকম ধরেই নেওয়া যায় আগামী ৯ নভেম্বর থেকেই রাজ্যের ভোট বাদ্যে কাঠি পড়তে চলেছে।
জাতীয় ভোটার দিবসের আগে ১৫ জানুয়ারি রাজ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা। তার অনেকটা আগেই নিখুঁত তালিকা প্রস্তুত করে দিতে চাইছে কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ২০২১-এ ভোট হবে অসম, কেরল, তামিলনাডু এবং পুদুচেরিতে। বাংলায় গত বিধানসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ১ মার্চ। নতুন সরকার গঠন হয়েছিল মে’র তৃতীয় সপ্তাহে। এবারও সেই নির্ঘন্ট বজায় থাকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন : ‘ক্ষমতায় এলে উত্তরপ্রদেশের মতো বাংলায়ও এনকাউন্টার হবে’, হুঁশিয়ারি সায়ন্তন বসুর]
রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনীর কাজ চলবে ১৮ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে চলবে নাম তোলা ও বাদ দেওয়ার আবেদন গ্রহণ, শুনানি। ঠিকানা পরিবর্তন বা সচিত্র পরিচয়পত্র সংশোধনও করা যাবে। অনলাইন ছাড়াও প্রতি বুথে শনি ও রবিবার ক্যাম্পের আয়োজন করে এই কাজ চলবে। ২০২১ এর ১ জানুয়ারি ১৮ বছর বয়স হবে এমন সবার নাম তুলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে।
১৮ তারিখ খসড়া তালিকা প্রকাশের আগে আপাতত বুথ পুনর্গঠন, বুথের পরিকাঠামো, অক্সিলিয়ারি বুথ তৈরি, ভোটার তালিকায় একই পরিবারের সকল সদস্য যাতে একই পার্ট নম্বরের মধ্যে থাকে সেই সংক্রান্ত কাজ চলছে। একই ভোটারের একাধিক নাম, একাধিক স্থানে একই ভোটারের নাম ইত্যাদি সংশোধন করে যতটা সম্ভব নির্ভুল খসড়া তালিকা প্রকাশিত হবে। অফলাইন ছাড়াও অনলাইনে ধারাবাহিক ভাবে সংশোধনের কাজ চলছে। ১৮ তারিখ পর্যন্ত অনলাইনে ইলেকটর্স ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম বা ইভিপি চলবে। যদিও দুর্বল ইন্টারনেট পরিষেবার কারণে এখনও বহু মানুষ পরিষেবার সুবিধা নিতে পারেননি। সর্বদল বৈঠক এ প্রসঙ্গটি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যে বিরোধী দলগুলি দাবি, ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন ও বিয়োজনের ক্ষেত্রে মানুষকে প্রভাবিত করছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল কংগ্রেসের অবশ্য পাল্টা দাবি, কমিশনের নির্দেশ মতোই প্রশাসন কাজ করছে।
[আরও পড়ুন : স্বস্তি দিচ্ছে রাজ্যে করোনাজয়ীর হার, দৈনিক সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা জারিই]
যদিও তালিকা থেকে নাম ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে কমিশন যথেষ্ট সতর্ক। এ নিয়ে বিতর্ক এড়াতে গত বছর থেকেই সাত নম্বর ফর্মে আবেদন প্রক্রিয়া চালু করেছে। ওই ফর্মে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন না এলে তালিকা থেকে কারও নাম কাটা যাবে না বলে নির্দেশ। পাশাপাশি সংশোধন প্রক্রিয়াতেও গুরুত্ব দিতে বলেছে কমিশন। রাজ্যে বুথ পুনর্গঠন নিয়ে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যেসব বুথে দেড় হাজারের বেশি ভোটার রয়েছে এবার সেগুলি ভাঙা হচ্ছে। ফলে নিশ্চিতভাবেই রাজ্যের বুথ সংখ্যা এবার বাড়তে চলেছে।