ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। ৫০০ গ্রামের কম ওজন অর্থাৎ খোকা ইলিশ ধরলে জাল বাজেয়াপ্ত করবে মৎস্য দপ্তর। প্রয়োজনে তা নষ্টও করে দেওয়া হতে পারে৷ এমনকী, বাতিল হতে পারে ট্রলারের রেজিস্ট্রেশনও। বারবার নিষেধ সত্ত্বেও মৎস্যজীবীরা তার তোয়াক্কা না করায় এবার খোকা ইলিশ বাঁচাতে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে দপ্তর।
[নবান্নে বৈঠকের আগেই রাজনাথের কাছে মমতার নামে নালিশ বিজেপি নেতাদের]
এমন কড়া নিয়ম চালু করতে চলতি আইনও কিছুটা সংশোধন করে নেওয়া হবে। এর আইনগত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে একাধিক দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা হবে। পুজোর আগে স্টেট লেভেল মনিটরিং কমিটির সঙ্গে জরুরি আলোচনার কথাও জানিয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। মন্ত্রী বলেছেন, “খোকা ইলিশ বাঁচাতে লাগাতার প্রচারের সঙ্গে কড়া আইনি ব্যবস্থাও দরকার। তাই পুজোর আগেই ইলিশ গবেষক, মৎস্যজীবী সংগঠনও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হবে।” মন্ত্রীর কথায়, “খোকা ইলিশ বাঁচাতে রাজ্যের চলতি আইন যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। তাই সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে আইনের কিছুটা হলেও সংশোধন প্রয়োজন।” একই বক্তব্য বিভাগীয় আধিকারিকদেরও। ইলিশ গবেষক তথা মৎস্য দপ্তরের সহ অধিকর্তা ডঃ সপ্তর্ষি বিশ্বাস বলেছেন, “৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ ধরা ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বাংলাদেশে। প্রজননের সময় ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়। রাজ্যে এই নিয়ম থাকলেও আইনের ফাঁক গলে হামেশাই খোকা ইলিশ ধরা ও বিক্রি হয়। তাই কড়া ব্যবস্থা হিসাবে জাল বাজেয়াপ্ত করে নষ্ট করা হতে পারে।’’
[ট্রেনের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মানসিক ভারসাম্যহীন, ব্যস্ত সময়ে ব্যাহত ট্রেন চলাচল]
দপ্তর সূত্রে খবর, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ১৯৯৮ সালে আইন তৈরি হয় রাজ্যের। ২০০৮ সালে সেই আইনের কিছুটা সংশোধন হয়। এবার সেই আইনের কিছুটা রদবদল করে ইলিশ প্রজনন ও খোকা ইলিশ বাঁচাতে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য। ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁসযুক্ত জালেই ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ ধরা হয়৷ তাই এই জালের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগী মৎস্য দপ্তর। এমন জাল তৈরি হয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও চেন্নাইতে। এই জাল রাজ্যে আসাও বন্ধ করতে চলেছে মৎস্য দপ্তর৷
[শহরে ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপন, গৃহবধূর লিভার বসল শিক্ষকের শরীরে]
গত মঙ্গলবার কাকদ্বীপের ৮ নম্বর লটে প্রায় ১২০০টন খোকা ইলিশ মাটিতে পুঁতে দেয় মৎস্য দপ্তর। এই কাজে মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিও সরকারকে সহযোগিতা করে। তা সত্ত্বেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি বা হাওড়ার বিভিন্ন বাজারে নজরদারি এড়িয়ে দেদার খোকা ইলিশ বিকোচ্ছে বলে মৎস্যজীবী সংগঠনেরই অভিযোগ। তাই যতদিন না লাইসেন্স বাতিলের মতো কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ততদিন অভিযান চলবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিভাগীয় আধিকারিকরা। রাজ্য মৎস্যজীবী ফেডারেশনের পক্ষে বিজন মাইতি রাজ্যের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
The post ইলিশ সংরক্ষণে আরও কঠোর আইন আনছে রাজ্য সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.