shono
Advertisement

অনুপস্থিত সরকারি ডাক্তারদের নিয়ে এবার রাজ্যের ‘সেনসাস’

চিকিৎসক সংকটে কড়া ব্যবস্থা নিল রাজ্য সরকার। The post অনুপস্থিত সরকারি ডাক্তারদের নিয়ে এবার রাজ্যের ‘সেনসাস’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:01 AM Jul 17, 2018Updated: 09:31 AM Jul 17, 2018

গৌতম ব্রহ্ম: ঝাড়গ্রাম থেকে টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালে বদলি হয়ে এসেছিলেন এক ইএনটি সার্জন। কিছুদিন ‘ডিউটি’ করার পরই উধাও হয়ে যান তিনি। ওই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের এক প্যাথোলজিস্টও দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে আসছেন না।

Advertisement

এমন উদাহরণ প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে রয়েছে। কোথাও সংখ্যাটা দুই। কোথাও চার। কোথাও আরও বেশি। সরকারি ডাক্তারদের একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে আসছে না। কেউ সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতির উদ্দেশে স্বেচ্ছাবসর চেয়েছেন। কেউ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কেউ আবার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কারণে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত। কেউ আবার কোনও কারণই দেখাননি।

[ মৃত মহিলাকেই হাসপাতালে ভরতির নিদান শহরের চিকিৎসকের, কেন জানেন? ]

এবার স্বাস্থ্য দপ্তর এই অনুপস্থিত ডাক্তারদের নিয়ে ‘সেনসাস’ শুরু করল। গত ৯ জুলাই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। প্রত্যেকটি ‘কেস’ নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। কেন তিনি আসছেন না, তার পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ি এবং চেম্বার থেকে খবর সংগ্রহ করতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “এই অনুপস্থিত চিকিৎসকদের নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হবে। তাই অনুপস্থিতির কারণ জানাটা দরকার। সিএমওএইচদের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।”

ফর্মে তিনটি ক্যাটেগরির উল্লেখ রয়েছে। এক, যাঁরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বা স্বেচ্ছাবসরের জন্য চিঠি দিয়েছেন। দুই, কোনও কারণ ছাড়াই যাঁরা দীর্ঘদিন হাসপাতালে আসছেন না। তিন, অসুস্থতার কারণে যাঁরা আসছেন না। অজয়বাবু জানিয়েছেন, প্রথম ক্যাটেগরির জন্য পদত্যাগপত্র বা স্বেচ্ছাবসরের চিঠির প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে শো-কজ করতে হবে। আর অসুস্থ ডাক্তারদের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে রোগের গভীরতা মাপতে হবে।

[ শহরে নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ, গ্রেপ্তার বাবা ও এক আত্মীয় ]

হাসপাতালের সুপাররা অবশ্য জানিয়েছেন, অনুপস্থিত ডাক্তারের বর্তমান ‘স্ট্যাটাস’ জানাটা তাঁদের পক্ষে খুব মুশকিল। পুলিশি সাহায্য চাই। তার চেয়ে ওষুধের দোকানে নজরদারি চালানোটা অনেক বৈজ্ঞানিক। মেডিক্যাল কাউন্সিল মারফতও ডাকা যেতে পারে ডাক্তারকে।

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় আমূল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন। ৪১টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়েছেন। একের পর এক ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’ হচ্ছে। কিন্তু ডাক্তারের অভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিষেবা দিতে সমস্যায় পড়ছে স্বাস্থ্য দপ্তর। তার উপর ‘রুরাল মেডিক্যাল সার্ভিস’ নিয়ে রাজ্য সরকারের বন্ড সংক্রান্ত নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। ফলে, সমস্যা বেড়েছে।

[ অ্যাম্বুল্যান্স নেই, দুর্ঘটনাগ্রস্তকে নিয়ে পুলিশের গ্রিন করিডর ধরে ছুটল অ্যাপ ক্যাবই ]

কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী রাজে্য চিকিৎসক-সংকটের কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, “ডাক্তারদের একাংশ রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বাইরে থেকেও ডাক্তার আনা যাচ্ছে না।” অথচ, ‘মেডিক্যাল সার্ভিস’ ও ‘মেডিক্যাল এডুকেশন’ দু’টি বিভাগেই ডাক্তারের আকাল। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ৯০০ ডাক্তারের ঘাটতি রয়েছে। বাকি সরকারি হাসপাতালে আড়াই হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি পূরণ হয়েছে মাত্র ৬০০ পদ। বাকি ১৯০০ পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অথচ, হাসপাতালগুলিতে শয্যা সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৮ হাজার।

The post অনুপস্থিত সরকারি ডাক্তারদের নিয়ে এবার রাজ্যের ‘সেনসাস’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement