চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের খবরের জের। মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের বাংলার প্রতিনিধিত্ব করা ফুটবলার অদ্রীজা সরখেলের বাড়ি পুষ্টি জাতীয় থাবার পৌঁছে দিলেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এই খবরটি শনিবার সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে গেলে তিনি ক্রীড়ামন্ত্রীকে জানান। ক্রীড়ামন্ত্রীর নির্দেশে আসানসোলের মেয়র সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে অদ্রিজার বাড়িতে শনিবার আসেন। তিনি এসে সরকারের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন অদ্রীজা ও তার পরিবারকে।
প্রসঙ্গত, করোনা প্রকোপে আগামী নভেম্বরে ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা ফুটবল বিশ্বকাপ বাতিল করে দিতে হয়েছে ফিফাকে। যেখানে সংগঠক দেশ হিসেবে ভারত সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছিল। গোলকিপার অদ্রীজার সেখানে দেশের জার্সিতে নামার কথা ছিল। কিন্তু করোনা গ্রাসে বিশ্বকাপ বাতিল হয়ে যাওয়ায় অদ্রীজাদের জাতীয় শিবিরও বন্ধ হয়ে যায় গত ১৩ মার্চ। এরপর থেকে বর্ধমানের চিত্তরঞ্জনে মামার বাড়িতে বসে অনন্ত অপেক্ষা। ফের কবে ডাকবে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন, কবে বসবে বিশ্বকাপ আসর? তবে জাতীয় শিবির বন্ধ হলেও জাতীয় কোচদের নজর থেকে দূরে নেই অদ্রীজা। প্রতিদিন অনলাইন ভিডিও ক্লাসে জাতীয় দলের কোচরা দেখছেন, ফিটনেসে যেন একটুও ঢিলেমি না আসে। অনলাইন ভিডিও ক্লাসে মিটিং হচ্ছে। তারপর জাতীয় কোচ থমাস, অ্যালেক্স অ্যামব্রোসদের পাঠিয়ে দেওয়া চার্ট ধরে ধরে প্র্যাকটিস। কখনও বাড়ির ছাদে। কখনও বাড়ির সামনে মাঠে। কখনও মামা শুভেন্দু ভট্টাচার্য কোচ। কখনও ছোটবেলার কোচ সঞ্জীব বাড়ুই আসছেন বল নিয়ে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে খাবার পাচ্ছেন না অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপে বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি]
শুক্রবার ফোনে শুভেন্দুবাবু দুঃখ করে বলছিলেন, “আমাকে সাহায্য করতে হবে না। সরকার বা কোনও ব্যক্তি যদি আমার ভাগ্নির চাহিদা মতো পুষ্টিকর খাওয়ার জোগানটা দিত, খুব উপকার হত। অদ্রীজা তো এই মুহূর্তে শুধু আমাদের পরিবারের নয়। বিশ্বকাপ দলে বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি। এখন ওর প্রতিদিন ভাল খাবার দরকার। সেটা এই লকডাউনে কোথায় পাব আমি?” আর বিশ্বকাপ দলে বাংলার মুখ অদ্রীজা বলছিলেন, “জাতীয় দলে থাকাকালীন যেভাবে খাওয়া দাওয়া করতাম, এখন আর সেসব সম্ভব নয়। মামার অটো বন্ধ। কী করে সংসার চালাবেন উনি? তাও আসানাসোল নববিকাশ ক্লাবের সঞ্জীব স্যর আর স্থানীয় ব্যক্তি রাজীব সরকার সাহায্যর হাত বাড়িয়ে না দিলে, রীতিমতো সমস্যায় পড়তাম।”
অদ্রীজার দুর্দশার কথা সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে প্রকাশিত হতেই বিষয়টি নিয়ে তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে দেখতে বলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। মন্ত্রীর নির্দেশে শনিবার সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে অদ্রীজার বাড়ি গিয়ে পুষ্টিজাতীয় খাবার দিয়ে আসেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সাহায্য পেয়ে রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলার প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার অদ্রীজা।
[আরও পড়ুন: ‘লিগে বিদেশি কমিয়ে ভারতীয়দের সুযোগ দিন’, ফেডারেশনকে পরামর্শ ইগর স্টিমাচের]
The post খবরের জের, লকডাউনে সমস্যায় পড়া বাংলার ফুটবলার অদ্রীজার পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.