ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রকাশ্য দিবালোকে হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর লোকের ভিড়। তারই মধ্যে কয়েকজনের নজর গেল হাসপাতালের সাইকেল স্ট্যান্ডের পাশে নার্স কোয়ার্টারের যাতায়াতের রাস্তার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখলেন এক বীভৎস দৃশ্য! সদ্যোজাতর দেহের কোমর থেকে নিচের অংশ নেই! কাঁধের কাছ থেকে বিছিন্ন ডান হাত। শরীরের অন্যান্য অংশও খুবলে নেওয়া হয়েছে। আর বাকি অর্ধেক দেহ ছেঁকে ধরেছে অসংখ্য মাছি। আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে কুকুর!
কাটোয়া (Katwa) মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে সদ্যোজাতর এমন ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে বুধবার এলাকায় ছড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য। খবর যায় কাটোয়া হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারপর যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই দেহ ও তার আশপাশে পড়ে থাকা দেহাংশগুলি তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে এমন অমানবিক দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন অনেকেই। স্থানীয়দের অনুমান, ওই চত্বরেই কোথাও ফেলে দেওয়া হয়েছিল সদ্যোজাতর দেহটি। তারপর কুকুর সেটি টানাটানি করে সাইকেল স্ট্যান্ডের কাছে নিয়ে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকটি কুকুরই খুবলে খাচ্ছিল দেহটি।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের পুরসভা-পঞ্চায়েতগুলির আর্থিক অবস্থা যাচাই করবে পঞ্চম অর্থ কমিশন, নেতৃত্বে সেই অভিরূপ সরকার]
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মে অর্থাৎ রবিবার কাটোয়া হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন এক প্রসূতি। পরেরদিন অর্থাৎ সোমবার তিনি এক মৃতশিশুর জন্ম দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত জমা দিয়ে মৃতশিশুটিকে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। কাটোয়া হাসপাতাল সুপার ডাঃ সৌভিক আলম বলেন,”ওই মৃত শিশুটি সেই মহিলারই কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন বেলা ১২টা নাগাদ হাসপাতালে চত্বরে ভরতি থাকা রোগীর আত্মীয়রা নার্স কোয়ার্টারের সামনে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখনই তাঁরা লক্ষ্য করেন, একটি কুকুর একটি শিশুকে প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে টেনে বের করে খাচ্ছে। এমন ঘটনা দেখেই শিউরে ওঠেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় হাসপাতাল চত্বরে থাকা পুলিশকর্মীদের। তারপরই নিজেদের অনুমানের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এও জানা যায়, যে প্লাসটিকে মৃত শিশুটি ভরা ছিল, সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। প্যাকেটটিতে ভাতারের বলগোনার ঠিকানা লেখা ছিল। হাসপাতালের সুপার জানান, “সমস্ত বিষয় আমরা খতিয়ে দেখছি।”