অর্ণব আইচ: উৎসবের মাঝে বিষাদের সুর। মানসিক অবসাদ কাটাতে না পেরে পুজোর দিনে আত্মঘাতী নরেন্দ্রপুর (Narendrapur) মিশনের মেধাবী ছাত্র। সোমবার রাতে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আত্মহত্যা বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে অনুমান করলেও, ঠিক কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে দেহটি। উৎসবের মাঝে এমন আকস্মিক ঘটনায় স্তব্ধ ছাত্রের পরিবার। শোকের আবহ পরিবারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবক বছর কুড়ির মৃন্ময় মুখোপাধ্যায়। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন কলেজের ফিজিক্স (Physics) অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের বাড়ি গল্ফগ্রিনে। এখানকার একটি ভাড়াবাড়িতে ৫ বছর ধরে থাকেন মৃন্ময়। জানা গিয়েছে, অত্যন্ত মেধাবী মৃন্ময়ের বাবা মৃণালবাবু সল্টলেকের এক হোটেলে কাজ করতেন। কিন্তু গত বছরের দীর্ঘ লকডাউনে (Lockdown) তিনি চাকরি হারান। তারপর থেকে কোথাও সেভাবে কাজের সুযোগ মেলেনি। ফলে সংসারে অনটন কিছুটা চলছিল। আর তা নিয়ে মৃন্ময় খুব চিন্তিত ছিলেন। কীভাবে সংসার চলবে, কীভাবেই বা নিজের পড়াশোনার খরচ চালাবেন, তা ভেবে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতেন। এমনকী তাঁকে মনোবিদ ডাক্তার অর্ঘ্য দাসের কাছে পরামর্শ নেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হতো।
[আরও পড়ুন: Weather Update: পুজোয় বাধা হবে না নিম্নচাপ! সুখবর শোনাল আবহাওয়া দপ্তর]
কিন্তু মনোবিদের পরামর্শেও বিশেষ কাজ হয়নি। মনের অসুখ কাটিয়ে উঠতে পারেননি মৃন্ময়। ষষ্ঠীর দিন তিনি নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে ছিলেন দীর্ঘক্ষণ। মা বারবার ডেকেও সাড়া পাননি। এই মুহূর্তে মৃন্ময়ের বাবা মৃণালবাবু এখানে নেই। তিনি যশিডিকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছেন। সারা সন্ধে ঘরবন্দি ছেলের সাড়াশব্দ না পেয়ে মা ফোন করেন মৃণালবাবুকে। তারপর আত্মীয়দের পরামর্শে ঘরের দরজা ভেঙে মৃন্ময়ের দেহ উদ্ধার হয়। ঘড়িতে তখন প্রায় রাত সাড়ে ১১টা।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: উৎসবের শুরুতেই স্বস্তি, গত ২৪ ঘণ্টায় অনেকটা কমল রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণ]
এত রাতেই মৃন্ময়কে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে বছর কুড়ির যুবকের। গলফগ্রিন থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা। তবে আত্মহত্যা ছাড়া মৃন্ময়ের মৃত্যুর নেপথ্যে এখনই অন্য কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন তাঁরা।