সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই হবে। স্কুলের সিলেকশন টেস্টে যদি পাশ না করে তবে একাদশ শ্রেণিতে সুযোগ মিলবে না। তাই গুগল দেখে মাত্রাতিরিক্ত প্রেশারের ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হল কলকাতার এক নামী স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রের। মৃত ছাত্রের নাম নীলাদ্রি মান্না। ঘটনায় পরিবারের অভিযোগ, আইরিশ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। নীলাদ্রির বাবা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। বাড়ি ২০ নম্বর নাকতলা রোড ‘কস্তুরী অ্যাপার্টমেন্ট’। নীলাদ্রির মামা কৌশিক সেনগুপ্তের অভিযোগ, ভাগ্নে সামনের বছর সিবিএসই পরীক্ষা দিত। পুজোর পরই সিলেকশন টেস্ট। এই পরীক্ষা পাশ করতে পারলে তবেই স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ মিলবে।
স্কুলে ভালো ছাত্র হিসাবেই পরিচিত নীলাদ্রি। গত কয়েকদিন ধরে দিনরাত এক করে পড়াশোনা করেছে। কিন্তু ২ তারিখ বিকেল থেকে আচমকা অস্বস্তি শুরু হয়। বাড়িতে বাবা-মা কেউ ছিলেন না। রাতে শুতে পারছিল না। বারবার উঠে পড়ছিল। চারদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। তাই বাবা ভেবেছিলেন হয়তো ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে। তাই পরদিন আইরিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কৌশিকবাবুর অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক বিশ্বনাথ সেনশর্মা তাকে দেখেন। ভর্তির নির্দেশ দেন। আচমকা নীলাদ্রি চিকিৎসকের কাছে এসে বলে গুগল সার্চ করে মানসিক চাপ কমাতে ১৫টি প্রেশারের ওষুধ খেয়ে নিয়েছে। ১০টি ৫MG এবং ৫টি ১০MG। নীলাদ্রি আরও বলে, “মা-বাবা চিন্তা করবে। দয়া করে ওদের বলবেন না।”
[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মাঝে বঙ্গে থাবা কালাজ্বরের, প্রাণহানিতে বাড়ছে উদ্বেগ]
চিকিৎসক বিশ্বনাথ সেনশর্মা বলেন, “শুনেই বুঝতে পারি অত্যন্ত মারাত্মক কাজ করে ফেলেছে ছেলেটি। তাই হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওর মা-বাবা হাসপাতালে ভর্তি করতে রাজি হননি।” পালটা অভিযোগ করে কৌশিকবাবুর অভিযোগ, “ছেলে প্রেশারের ওষুধ খেয়েছে ঠিকই। কিন্তু দিনভর কোনও চিকিৎসক তাকে দেখেনি। সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় বার বার উঠে বসছিল। চিকিৎসককে ফোন করেছিলাম। তবে চিকিৎসক আসেননি। শেষ পর্যন্ত আমাদের অনুমতি ছাড়াই ওকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নীলাদ্রি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে।” ঘটনায় বৃহস্পতিবার নীলাদ্রির বাবা হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর কথায়, “শেষ দেখে ছাড়ব। প্রয়োজনে মেডিক্যাল কমিশনে যাব।”
দেখুন ভিডিও: