ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University)। তিন ছাত্রকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে রাতভর উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখল পড়ুয়ারা। একটানা প্রায় ১৪ ঘণ্টা উপাচার্যের বাড়ি ঘিরে আন্দোলনে শামিল ছাত্রছাত্রীরা।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। তিনজন ছাত্রছাত্রীকে বিশ্বভারতী থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থনীতি বিভাগের তালা ভেঙেছে ওই পড়ুয়ারা। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিল তারা। সে কারণে কার্যত ‘অনৈতিকভাবে’ ছাত্রদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় অফিস ঘেরাও করে বিশ্বভারতী একদল ছাত্রছাত্রী। তারা কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে। একইভাবে পূর্বপল্লিতে উপাচার্যের বাড়ির সামনে ছাত্রছাত্রীরা অবস্থানে বসে।
[আরও পড়ুন: সেতুতে ধস, লাইন মেরামতির জেরে ব্যাহত শিয়ালদহ-বনগাঁ আপ শাখার ট্রেন চলাচল]
উপাচার্যের সিএ তন্ময় নাগ তিনি অফিস থেকে বেরনোর চেষ্টা করেন। তার ফলে অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর কর্মীদের বচসা শুরু হয়। তর্কাতর্কিও হয়। পরে নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়িটি অফিসের বাইরে বের করে দেয়। এরপর রাত ৯টা নাগাদ ছাত্রছাত্রীরা কেন্দ্রীয় অফিসের ঘেরাও তুলে নেয়। তারা চলে আসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে। সেখানে জোরদার ঘেরাও কর্মসূচি শুরু হয়। সারারাত ধরে ঘেরাও চলে। শনিবার সকালের ছবিও একইরকম। কখন ঘেরাও উঠবে, সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানায়নি আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করেন দু’জন অধ্যাপক ও এক পড়ুয়া। বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তাও হয় তাঁদের। অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) জানান, বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধ্যাপকরা। সেই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করবে তৃণমূল। কারণ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীকে কার্যত রাজনীতির আখড়া বানিয়ে দিয়েছেন বলেই দাবি জেলা তৃণমূল সভাপতির। উপাচার্য ‘পাগল’ বলে কটাক্ষও করেন তিনি। “ক্ষমতা থাকলে উপাচার্য ঘেরাও আটকান”, বলে চরম হুঁশিয়ারিও দেন অনুব্রত। হুঁশিয়ারির পরই ছাত্রদের ঘেরাও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সকলেই। এ প্রসঙ্গে তোপ দাগেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “বিশ্বভারতীকে রাজনীতির আখড়া করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুন্ডামি করার জায়গা নয়। এইসব করে শান্তিনিকেতনের গরিমা নষ্ট করা হচ্ছে।”