দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: হুগলির ভদ্রেশ্বরের পর দক্ষিণ ২৪ পরগনার মল্লিকপুর। ফের সেলফির (Selfie) নেশায় বুঁদ হয়ে প্রাণ হারাল এক ছাত্র। বছর ১৬র ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয় স্থানীয় একটি ঝিল থেকে। মৃতের নাম বাবাই দাস। বালিগঞ্জের বাসিন্দা বাবাই আদি বালিগঞ্জ হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বলে জানা গিয়েছে। সেলফি তুলতে গিয়ে সে ঝিলে পড়ে গিয়েছিল। সাঁতার না জানায় জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে সেলফি তোলার নেশা চেপেছিল তার। ছোট ছোট ভিডিও করেও সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) পোস্ট করত বছর ষোলর বাবাই দাস। বন্ধুদের মধ্যে সেই কারণে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিল সে। তবে সেই ভিডিও তোলার নেশাই যে প্রাণহানির কারণ হবে, তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি কেউ। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তাই। রবিবার স্থানীয় এক ঝিলের জল থেকে উদ্ধার হল বাবাই দাসের দেহ। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার রাতে মল্লিকপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল বাবাই ও তার দুই বন্ধু। রবিবার তারা নির্জন ঝিলের কাছে যায় ছবি তুলতে। সেখানে গিয়ে ঝিলের পাশে একটি ভাঙা বাঁধানো জায়গার উপর উঠে দাঁড়িয়ে ভিডিও তোলার পরিকল্পনা করে বাবাই। সেইমতো ওই জায়গায় উঠতেই সে পা পিছলে সোজা পড়ে যায় ঝিলের জলে।
[আরও পডুন: পাত্র দেখানোর নামে ডেকে তরুণীকে লাগাতার গণধর্ষণ! গ্রেপ্তার ঘটক]
চোখের সামনে বন্ধুর এমন অবস্থা দেখে বাকি দু’জন রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের খবর দেয়। নবী আখতার নামে বাবাইয়ের এক বন্ধু জানান, ”ও যখন ভিডিও তুলতে গিয়ে জলে পড়ে যায়, তখন আমরা তাড়াতাড়ি ওকে তোলার চেষ্টা করি। স্থানীয় মানুষদের খবর দিই। কিন্তু ততক্ষণে ও তলিয়ে যেতে থাকে।” ঝিলের পাশ থেকে একটি গাছের ডাল ভেঙে বাবাইয়ের দিকে এগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। নিহত যুবকের মা মুন্নি দাস বলেন, ”মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পর মোবাইল কিনে দিয়েছিলাম। সেই মোবাইল দিয়ে ও মাঝেমাঝে বিভিন্ন রকম ভিডিও ছবি তুলত। কিন্তু তা করতে গিয়ে এইভাবে জলে ডুবে যাবে, তা বুঝতে পারিনি।”
[আরও পডুন: পুজো মিটতেই শুরু কাউন্টডাউন, লক্ষ্মীপুজোর পর উপনির্বাচনের প্রচারে অভিষেক]
এরপর স্থানীয় মানুষজন এসে জলে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে অবশ্য ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের একটি দলকে খবর দেওয়া হয়। খবর যায় বারুইপুর থানায়। কিন্তু ডুবুরি আসার আগেই স্থানীয় মানুষজন ওই বড় পুকুরে জাল ফেলে উদ্ধার করে ওই যুবককে। জানা গিয়েছে, নবি আহমেদ সাঁতার জানলেও নবি আখতার ও বাবাই দাস সাঁতার জানত না। আর সাঁতার না জানার কারণে এই মৃত্যু বলে পুলিশের অনুমান। তবে অন্য দুই বন্ধু কেউ তদন্তের স্বার্থে জেরা করতে চায় পুলিশ।