নিজস্ব সংবাদদাতা, বসিরহাট: কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ায় ধৃত সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের মামলার সাক্ষীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য। ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে, তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই তিনজনের কারও নামই মূল সাক্ষী ভোলা ঘোষের এফআইআরে নেই। উল্টে, তাঁর এফআইআরে নাম থাকা অন্যতম অভিযুক্ত তথা শাহজাহানের ভগ্নিপতি সাবির আলি মোল্লা দুর্ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এফআইআরে নাম না থাকা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি নাম থাকা ব্যক্তিরা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, বসিরহাটের ন্যাজাট থানার রাজবাড়ি আউটপোস্টে ভোলা ঘোষ যে আট জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম সাবির আলি মোল্লা। তার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না তাঁর। ভোলা ঘোষ লিখিত অভিযোগে সাবির আলি মোল্লা দাবি করেছেন, যে তাঁর উপর খুনের চেষ্টা পরিকল্পনার নীলনকশা তৈরি হয়েছিল সাবিরের বাড়িতেই। প্রায় তিন মাস আগে সেই পরিকল্পনা করা হয়। যে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটে, সেখান থেকে সাবিরের বাড়ির দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। ফলে সন্দেহ আরও জোরদার। শেখ শাহজাহানের ভগ্নিপতি সাবিরের বাড়ি তালতলা কুলুপাড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, সাবির আলি মোল্লা পেশায় ভিলেজ পুলিশ।
গত বছর ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়ায় উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সাসপেনশনের আগেই কীভাবে তিনি বাসন্তী হাইওয়ের ধারে প্রায় এক বিঘা জমির উপর বিশাল বাড়ি নির্মাণ করলেন? যার বাজারমূল্য কোটি কোটি টাকা বলে দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভও রয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, একজন ভিলেজ পুলিশ হয়ে কীভাবে এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন সাবির? শেখ শাহজাহানের মতো প্রভাবশালী ভগ্নিপতির ছত্রছায়ায় থেকেই কি তিনি অসৎ পথ অবলম্বন করেছিলেন? অভিযোগ আরও গুরুতর, কারণ সিবিআই-এর খাতায় নাম থাকলেও আজও অধরা সাবির আলি মোল্লা। স্থানীয়দের দাবি, পরশুদিন শেষবার সাবিরকে এলাকায় দেখা গিয়েছিল। তার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। যে বাড়িতে তিনি থাকতেন, সেখানে তালা ঝুলছে। এই পরিস্থিতিতে পলাতক সাবিরকে নিয়ে এলাকায় চাপা আতঙ্ক ও ক্ষোভ দুটোই বাড়ছে।
