বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: লোকসভা ভোটের হারের পরই প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়েছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। অবশেষে তাঁকে সরিয়ে শুভঙ্কর সরকারকে বাংলার নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দায়িত্ব দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। জানা যাচ্ছে, বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শুভঙ্কর। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বঙ্গে ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেসের ভার সামলাতে ও তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যে ও কেন্দ্রের সমীকরণ ঠিক রাখতেই শুভঙ্করের উপর আস্থা রাখছে দিল্লির হাই কমান্ড।
এতদিন বঙ্গ কংগ্রেসের ভার সামলে এসেছেন পুরোপুরি তৃণমূল বিরোধী অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূলের অন্যতম বিরোধী মুখ হিসেবে উঠে এসছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে বঙ্গ তো বটেই কেন্দ্রেও তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে জাতীয় রাজনীতিতে মমতার গুরুত্ব ভালোই বোঝেন রাহুল-সোনিয়ারা। তাই বঙ্গে অধীরের ভুমিকায় নাখুশ ছিল দিল্লি। এই অবস্থায় অধীরকে সরিয়ে নরমপন্থী শুভঙ্করকে জায়গা দিয়ে আসলে মমতার মন ভেজানোর চেষ্টা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
জাতীয় কংগ্রেসের প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
কিন্তু কে এই শুভঙ্কর সরকার?
জানা যাচ্ছে, সেভাবে প্রচারের আলোয় না এলেও, দীর্ঘ বছর ধরে নানা রাজ্যে কংগ্রেসের দায়িত্ব সামলেছেন শুভঙ্কর। ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট সর্বভারতীয় কংগ্রেস সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এর আগে মেঘালয় প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ও মিজোরাম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির স্টেট ইনচার্জের দায়িত্ব সামলান। এবার তাঁকেই বাংলার প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
বাংলায় ভাঙতে থাকা কংগ্রেস সামাল দিতে নয়া প্রদেশ সভাপতিকে যে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একে বাংলায় ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস। মোমবাতির মতো যেটুকু জ্বলছে তার বেশিরভাগটাই অধীরমুখী অর্থাৎ মমতা বিরোধী। সেখানে নরমপন্থী শুভঙ্কর তৃণমূলকে না চটিয়ে দলকে শক্তিশালী করার কাজ বেশ কঠইন হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০২৬-এর বাংলায় পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন তার আগে দলকে শক্তিশালী করার কঠিন দায়িত্ব নিয়ে কতটা সফল হবেন শুভঙ্কর সরকার সেদিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।
এদিকে নতুন দায়িত্ব পেয়ে এদিন শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, 'আমি খুব ছোট্ট একজন কর্মী। সেই কর্মীকে যে দিল্লি, AICC নেতৃবর্গ, কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি খাড়গে, রাহুল এবং বেণুগোপালজি এরা যে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি মনে করি, আমি নই, আমরা এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, এই সচলতা নিয়ে পশ্চিমবাংলার কংগ্রেস কর্মীদের যে চাহিদা, এবং নেতৃবর্গের যে নির্দেশ, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে, পশ্চিম বাংলার মানুষের কংগ্রেসের প্রতি যে আশা ভরসা, সেই প্রত্যাশা যাতে পূরণ করা যায়, সেই লক্ষ্যেই কিন্তু আগামী দিন, প্রদেশ কংগ্রেসের চলার পথ তৈরি হোক।'