সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ''তালিবানের (Taliban) জনসংযোগ শাখা খুব চেষ্টা করছে ওদের সব অপরাধকে ধামাচাপা দিয়ে দিতে। সাংবাদিক সম্মেলন করে ওরা দাবি করেছে আফগানিস্তানের (Afghanistan) সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ওরা মেনে নেবে। কিন্তু আমি আপনাকে বলছি এটা নির্জলা মিথ্যে।'' আফগানিস্তানের অন্যতম সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায়ের (Hazara) প্রতিনিধি আসাদুসল্লা এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তালিবানের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, তালিবান তাঁদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে।
গত ১৫ আগস্ট নতুন করে আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। আর তারপর থেকেই ভয়ে কাঁপছে হাজারা সম্প্রদায়ের মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলি। যত অতীত-স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে, ততই যেন বাড়ছে আতঙ্কের চোরাস্রোত। আর আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে তিন দিন আগে। হাজারা নেতা আবদুল আলি মাজারিকে ১৯৯৫ সালে খুন করেছিল তালিবান জঙ্গিরা। দিন তিনেক আগে সেই নেতার মূর্তি ভেঙে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে জেহাদিরা। এই আক্রমণ থেকেই পরিষ্কার, কিছুই বদলায়নি তালিবান।
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: তালিবানের সঙ্গে কাজ করতে আপত্তি নেই, British PM-এর মন্তব্যে বাড়ছে জল্পনা]
কিন্তু তালিবান যে মুখে বলছে সবাইকেই সরকারে অন্তর্ভুক্ত করবে? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে আসাদুল্লা জানাচ্ছেন, ''আমি হলফ করে বলতে পারি এটা নির্জলা মিথ্যে। ওসব মিষ্টি মিষ্টি কথায় নিজেদের অপরাধকে মুছে দিতে পারবে না ওরা। আফগানিস্তানে এই মুহূর্তে আমাদের সম্প্রদায় বড় বিপদের মধ্যে রয়েছে। প্রতিদিনই তাদের তালিবানের নিশানায় পড়তে হচ্ছে। তাদের সম্পত্তি, টাকাকড়ি হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।'' আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছেন আসাদুল্লা। তাঁর কথায়, ''তালিবান তো জঙ্গি। আমাদের মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপরে প্রবল অত্যাচার করেছে ওরা। আমরা বিক্ষোভও দেখিয়েছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমার অনুরোধ, আমাদের বাঁচান।''
আফগানিস্তানে সাম্রাজ্য কায়েম তালিবানের
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরতে শুরু করার পর থেকেই দ্রুত দেশের দখল নিতে থাকে তালিবান। গত ১৫ আগস্ট তারা কাবুলে ঢুকে পড়ে। এরপরই দেশের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি পালিয়ে যান কাবুল ছেড়ে। তিনি দেশ ছাড়ার পর আফগানিস্তানের শাসক হয়ে উঠেছে তালিবান। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ আফগানদের মনে ভয় ক্রমশই বাড়ছে। ইতিমধ্যে শুরুও হয়ে গিয়েছে তালিবানি তাণ্ডব। এর মধ্যে সংখ্যালঘুদের ভয় আরও বেশি। শুরুতে যতই ভালমানুষি দেখাক, তালিবান যে আছে তালিবানেই তা এখন সকলের কাছেই পরিষ্কার।