রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: পুজোর (Durga Puja 2020) আয়োজনে সরকারি অনুদান কেন? শেষ কিছুদিনে এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। জল গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। অনুদানের অর্থ কতটা, কোন খাতে খরচ করতে হবে তা-ও বেঁধে দিয়েছে আদালত। এবার অনুদান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন দিলীপ-সুজনরা। “ভোটের কথা মাথায় রেখেই ক্লাবকে অনুদান”, ইঙ্গিতে একথাই বোঝালেন বিজেপি সাংসদ।
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন, চলতি বছরে পুজোয় ১০ বছরের পুরনো ক্লাবগুলি প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান পাবে। এরপরই পুজোয় সরকারি অনুদানের যৌক্তিকতা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দুর্গাপুরের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে অনুদান দেওয়ার কারণও জানতে চাওয়া হয়। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেয়, ক্লাবগুলোকে সরকারি অনুদানের অর্থের ৭৫ শতাংশই খরচ করতে হবে স্বাস্থ্যখাতে অর্থাৎ মাস্ক, স্যানিটাইজারের মতো কোভিড (COVID) কিট কিনে তা দর্শনার্থীদের বিলি করতে হবে। কোনও বিনোদনূমলক অনুষ্ঠানে এই অর্থ একেবারেই খরচ করা যাবে না। বাকি ২৫ শতাংশ অর্থ জনসংযোগে ব্যয় করা যেতে পারে।
[আরও পড়ুন: পটাশপুরে মৃত বিজেপি কর্মীর ফের ময়নাতদন্ত, করতে হবে ভিডিওগ্রাফি, নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের]
আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েই শুক্রবার অনুদান ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেন, “৫০ হাজার টাকার মাস্ক, স্যানিটাইজার লাগে না। রাজনীতিকে ধার্মিক আকারে নিয়ে গিয়ে যেভাবে ভোট পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে তা আগামী দিনে বন্ধ হওয়া দরকার। কোর্ট যা দিক নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে চলা উচিত।” অনুদান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ‘মিথ্যে’ বলছেন বলে তোপ দেগে এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পুজোর অনুদান নিয়ে আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রী অসত্য বলছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে পুজো কমিটিগুলো বিজ্ঞাপন পাবে না, তাই তাদের পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ সরকারের আইনজীবীরা আদালতে জানিয়েছেন মাস্ক ও স্যানিটাইজটার কেনার জন্য এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে। সরকারি উকিলদের এই উলটো বয়ানই সব কিছুর প্রমাণ।” সব জেনেও আমলারা কেন চুপ? এনিয়েওপ্রশ্ন তোলেন সুজনবাবু। উৎসবের আবেগ নিয়ে সরকার ছিনিমিনি করছে বলেই অভিযোগ তাঁর।