সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) পর এবার সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষের সুর সুকান্তর মুখে। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআইয়ের আরও দ্রুত তদন্ত করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। শনিবার কাঁচরাপাড়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই আরও তাড়াতাড়ি কাজ করলে খুশি হতাম। অনেক দিন হয়ে গেল। একবছর পার হয়ে গিয়েছে। এত দেরি। দেরি করে গ্রেপ্তার হচ্ছে। আরও আগে গ্রেপ্তার হলে খুশি হতাম। দ্রুত তদন্ত করলে আরও বেশি গ্রেপ্তার হত। সিবিআই তৎপরতা আরও দ্রুত হলে খুশি হব।”
কিছুদিন আগেই সিবিআই সেটিং মন্তব্যে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআইকে বিশ্বাস করে ন্যায় পাননি বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, সিবিআইয়ের বহু আধিকারিক বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন। সেটিং হয়েছিল। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ইডিকে বাংলায় পাঠিয়েছে। যদিও দিলীপ ঘোষের মতো কড়া ভাষাতে না হলেও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে এদিন কার্যত প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির সুরেই কথা বলেছেন বর্তমান সভাপতি সুকান্ত। রাজনৈতিক মহল অবশ্য মনে করছে, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা সিবিআইয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন।
[আরও পড়ুন: মমতা-অভিষেকের পাশে স্বমহিমায় ‘জেলবন্দি’ অনুব্রতর ছবি, বীরভূমজুড়ে তোরণ TMCP’র]
শাসক তৃণমূল তো বটেই বামেদের ও অভিযোগ, সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বিজেপি। এই বিষয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কুণালবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিজেপি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চায়। ভোট পরবর্তী হিংসার নামে একশো রকমের কেস দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি নেতারা নাম দিয়ে দেবেন আর তাদের তুলে আনা হবে? সিবিআই তো তাদের কথাই মানছে। যখনই মানছে না তখনই এসব কথা বলছে বিজেপি নেতারা। বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে দিচ্ছে। অভিযোগ বড় কথা নয়। বলছে অমুককে টার্গেট, তাকে তুলে আনতে হবে।”
কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “আমি শুনলাম আমার জন্য জায়গা রাখা আছে আসুন। তার মানে পরিষ্কার তৃণমূলে গেলে খারাপ আর বিজেপিতে গেলে ভাল। শুধু কুণাল ঘোষ নয়। এই নামটা সিম্বল। বিজেপিতে গেলে তার মানে সমালোচনা হবে না।” এরপরই বিজেপিকে তৃণমূলের মুখপাত্রর তোপ, নারদায় যারা তৃণমূলে ছিলেন তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর যে বিজেপিতে গিয়েছে সে ভাল। এই হল বিজেপির চরিত্র।
এদিকে, দিলীপ ঘোষ সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাকে সতর্ক করেছিল। অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বিজেপিও। কিন্তু এবার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআইয়ের ভুমিকায় অসন্তোষ সুকান্তর মুখে প্রকাশ পাওয়ায় জল্পনা রাজনৈতিক মহল তো বটেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও। তাহলে কি দলের সাধারণ কর্মীদের মন পেতে দিলীপ ঘোষের সুরই শোনা গেল সুকান্তর মুখে।