সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দলবদলুদের নিয়ে আসা ভুল ছিল। কার্যত মেনেই নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর যখন তিনি একথা বলছেন, তখন আদি-নব্য দ্বন্দ্বে পুড়ছে বঙ্গ বিজেপি।
দলবদলু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সুকান্তদের। বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চাইছে দলবদলুরা। ফলে কার্যত চাপে পড়ে আর সেই দলবদলু বা শুভেন্দু শিবিরকেই যে সোমবার সুকান্ত পরোক্ষে বার্তা দিয়েছেন সেটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বঙ্গের গেরুয়া শিবিরে কোন্দল ক্রমশ বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিক্ষোভ। এরই মধ্যে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বার্তা রীতিমতো চাঞ্চল্য ফেলে দিল গেরুয়া শিবিরে। একুশের ভোটের আগে যোগদান মেলা করে পার্টির দরজা যেভাবে খুলে দেওয়া হয়েছিল, তাতে যে দলের ক্ষতি হয়েছে তা কার্যত মেনে নিলেন সুকান্ত। কোনও বাছবিচার না করে অন্য দল থেকে আসাদের যেভাবে সাদরে বরণ করে নেওয়া হয়েছিল বিজেপিতে, সেটা যে বুমেরাং হয়েছে তা কার্যত স্বীকার করলেন দলের রাজ্য সভাপতিই।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর পর নভেম্বর জুড়ে ১৩ দিন ছুটি! হিসেবনিকেশ শুরু সরকারি কর্মীদের মধ্যে]
সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্তর বক্তব্য, ‘‘একুশে তৃণমূলের দাগিদের নিয়ে আমাদের হাত পুড়েছে। আমরা ঠেকে শিখেছি।’’ আদি-নব্য দ্বন্দ্বের মধ্যে শুভেন্দুর দিকেই এই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি নতুনদের হাতে যাতে দলের রাশ না চলে যায় সেটা নিয়েই এই বার্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপরও একটা চাপ তৈরি করে রাখলেন সুকান্তরা। এদিকে, ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বিজেপি। দলের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ও সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ কয়েকজনকে সরানোর দাবি দলের মধ্যে আগেই উঠেছে। এবার সেভ বেঙ্গল বিজেপির তরফে টুইট করে বলা হল, “অমিত মালব্য আর অমিতাভ চক্রবর্তীর বিদায় না হলে আগামিদিনে বাংলার বিজেপি আরও ভাঙবে, বিক্ষোভ আরও বাড়বে, তথাগত রায় এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বি এল সন্তোষ আপনি দয়া করে সাধারণ বিজেপি কর্মীদের কথা শুনুন। আপনাকে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। বুথ অনেক দূর, ৬০ ভাগ মণ্ডল গঠন হয়নি।”
এদিকে, হুগলিতে বিজেপির মধ্যে কোন্দল ও কাদা ছোড়াছুড়ি অব্যাহত। উত্তরপাড়াতে বিজেপি দলের পুরনো দিনের নেত্রী হিসাবেই পরিচিত কাকলি ভট্টাচার্যর সোশাল মিডিয়ার পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাক্তন এই বিজেপি নেত্রীকেই রাজভবনের সামনে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের গাড়ি দেখে ক্ষোভ উগরে দিতে। এবার আবার বিজেপি দলের মণ্ডল সভাপতি ও জেলা সভাপতিদের চোর বলে পোস্ট করেছেন কাকলি। এমনিতেই বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মোহন আদকের বিরুদ্ধে টাকা তছরুপের অভিযোগ এনে সোশাল মিডিয়ায় বিজেপি দলের কর্মীদের পোস্ট ভাইরাল হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ছেলে বিক্রি আছে! যোগীরাজ্যে ফুটপাথে ঋণ শোধ করতে প্ল্যাকার্ড হাতে অসহায় বাবা]
এবার গোদের উপর বিষফোড়া হয়ে দাঁড়াল প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর পোস্ট। ফেসবুক পোস্ট করে বিজেপি দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ছাড়ার কথাও জানিয়েছেন কাকলি ভট্টাচার্য। তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, বিজেপি দলের সবাই চোর, মণ্ডল সভাপতি থেকে জেলা সভাপতি সবাই চুরি করেছে। আগে নেতারা নিজেরা ঠিক হোন তারপর অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে রাজভবন যাবেন।