দুলাল দে: সাফ ফাইনালের আগে মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যেই বর্ষসেরা ফুটবলারের নাম ঘোষণা করবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। এবং বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর (Sunil Chhetri) নাম নেই।
এদিন বেঙ্গালুরুতে ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ের পর প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া, আইএম বিজয়ন, সাবির আলি এবং ক্লাইম্যাক্স লরেন্সের হাতে তিনজন ফুটবলারের তালিকা তুলে দেওয়া হয়। বলা হয়, এই তিনজন ফুটবলারের মধ্যে থেকে একজনকে বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে নির্বাচিত করতে।
[আরও পড়ুন:বেয়ারস্টোকে ফেরাননি কামিন্স, এক ইংরেজ তারকাকে আউট করে ফিরিয়েছিলেন ধোনি]
বাইচুং-বিজয়নরা ফেডারেশনের তরফে ফুটবলারদের যে তালিকা হাতে পান, তাতে বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে রয়েছেন ছাংতে, নাওরেম এবং নন্দ। তবে এই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ফেডারেশন কর্তাদেরও কোনও হাত নেই। বিভিন্ন কোচদের থেকে যে তালিকা এসেছে, সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে তিন ফুটবলার ছাংতে, নাওরেম এবং নন্দকে। আর বর্ষেসেরা ফুটবলারের দৌড়ে থাকার জন্য শুধুই দেশের হয়ে পারফরম্যান্স নয়। সারা বছর ক্লাব ফুটবলের পারফরম্যান্সও দেখা হয়েছে। আবার অনেকে বলছেন, সুনীল ছেত্রী এর আগে অনেকবার বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন। তাই হয়তো পরের জেনারেশনের ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করার জন্যই সুনীলের নাম রাখা হয়নি। মোদ্দা কথা, বর্ষসেরা ফুটবলারের দৌড়ে সুনীলের নাম নেই। এখানে বলে রাখা যাক, ইমার্জিং ফুটবলারের পুরস্কার পাচ্ছেন আকাশ মিশ্র।
এদিকে আই লিগ খেলার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যে দরপত্র জমা পড়েছিল, এদিনের মিটিংয়ে তা খোলা হয়। যে পাঁচটি দল আবেদন করেছিল আই লিগ খেলার জন্য, সেই পাঁচটি দলকেই আই লিগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি দল হল, ইন্টার কাশী, নিমিদা ইউনাইটেড (বেঙ্গালুরু ইউনাইটেড), নামধারী, কনকাতেনাতে (জিন্দাল/টিভিএস), এবং বাঙ্কারহিল। তবে বাঙ্কারহিলের ক্ষেত্রে একটি শর্ত থাকছে। বাঙ্কারহিল যদি মহামেডান ক্লাবের স্পনসর হিসেবে থাকতে চায়, তাহলে আই লিগে খেলতে পারবে না। আবার আই লিগে খেলতে চাইলে মহামেডানের স্পনসর থাকতে পারবে না।
সংবাদ প্রতিদিনে সোমবারই প্রকাশিত হয়েছিল, ফেডারেশন ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি হতে চলেছেন কর্নাটকের সত্যনারায়ণ। এদিন ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সত্যনারায়ণই হবেন ফেডারেশনের নতুন ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি।
এর পাশাপাশি যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা রাজ্যসংস্থা গুলির জন্য সত্যিই খুশির খবর। আগেই অবশ্য আলোচনা হয়েছিল। এদিন সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি রাজ্য সংস্থাকে ২৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। শুরুতে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে, অফিস সিইও সহ রাজ্যের ফুটবলকে ডেভলপ করতে কোচ নিয়োগের জন্য। কাজ শুরু হলে আরও ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। বাকি ১২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে রাজ্য সংস্থাগুলিকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
এদিন ঠিক হয়েছে, ৬-১২ বছর বয়সী ছাত্রদের নিয়ে সারা দেশব্যাপী স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করার। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ব্লু কাপ।’ এই সবের সঙ্গে আরও একটি সিদ্ধান্তও হয়। ফরেনসিক অডিটের জন্য প্রাক্তন সচিব কুশল দাসের বকেয়া টাকা আটকে রাখা হয়েছিল। এদিন কার্যকরী কমিটিতে ঠিক হয়, শুধুই কুশল দাস নন। প্রাক্তন আই লিগ সিইও সুনন্দ ধর সহ বাকি যাঁদের বকেয়া রয়েছে, প্রত্যেকের আর্থিক বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে।
এদিন সভায় উপস্থিত, হয়ে বাইচুং ভুটিয়া ‘কোর’ কমিটির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিভিন্ন সাব কমিটির পাশাপাশি কোর কমিটির কেন প্রয়োজনীয়তা পড়ল তা জানতে চান তিনি। সিদ্ধান্ত হয়, কোর কমিটি চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। কোনও কিছু পরামর্শ দিতে পারবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটি। এরপর বাইচুং অনুরোধ করেন, একজন ফুটবলারকেও তাহলে এই কমিটিতে রাখা উচিত। তখন সাব্বির আলিকে কোর কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।