সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্য প্রশাসনের কোনও অধিকার নেই বিচারকের ভূমিকায় বসে অভিযুক্তর বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগেই বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার। বুলডোজার দিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙা প্রসঙ্গে একথাই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গেই শীর্ষ আদালত বেআইনি ও দখলীকৃত নির্মাণ ধ্বংসের ক্ষেত্রে গাইডলাইন বেঁধে দিল। জানিয়ে দিল, তা করতে হবে ১৫ দিনের নোটিসে। করতে হবে ভিডিও রেকর্ডিং।
ঠিক কী কী জানাল সুপ্রিম কোর্ট?
- শুধুমাত্র বেআইনি নির্মাণগুলিকে ভেঙে ফেলা যাবে।
- আগাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কোনও নির্মাণ ভাঙা যাবে না। নোটিসটি স্পষ্টভাবে নির্মাণের কাছেই প্রদর্শিত করতে হবে।
- ১৫ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।
- বিজ্ঞপ্তিতে ভাঙার কারণ ও শুনানির তারিখ উল্লেখিত থাকতে হবে।
- বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে কেন এমন চরম পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।
- বিজ্ঞপ্তি জারির সঙ্গে সঙ্গে জেলাশাসককেও তা মেলের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে।
- বিস্তারিত 'স্পট রিপোর্ট' অবশ্যই তৈরি করতে হবে। এবং নির্মাণটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও রেকর্ডিং রাখতে হবে। ঘটনাস্থলে সরকারি আধিকারিক ও পুলিশকে উপস্থিত থাকতে হবে।
- এই নির্দেশ অমান্য করলে তা অবমাননা বা অন্যান্য আইনি পদক্ষেপের জন্য বিচার্য হবে।
- এই নির্দেশিকা লঙ্ঘন করা হলে দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপরে।
সেই সঙ্গেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বেআইনি নির্মাণটি যদি সরকারি রাস্তা, রেললাইন, ফুটপাথ বা জলাশয়ের উপরে হয় কিংবা ওই ভাঙার কাজটি কোনও আদালতের নির্দেশে হয় সেক্ষেত্রে এই গাইডলাইন মানতে হবে না। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত পরিষ্কার করে দিয়েছে সরকারি আধিকারিক কখনওই বিচারক নন। এবং কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে সেই ব্যক্তির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার অধিকার নেই তাঁর।
প্রসঙ্গত, ২২ অক্টোবর শুনানিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়েছিল আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বুলডোজার চালালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই হুঁশিয়ারি উড়িয়ে বেআইনি ভাবে এক ব্যক্তির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আগেই উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এইসঙ্গে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেওয়া হয়। এবার এই সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে গাইডলাইনও বেঁধে দিল শীর্ষ আদালত।