সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইআইটি ধানবাদে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ মিললেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেননি দলিত ছাত্র অতুল কুমার। গত ২৪ জুন ছিল ভর্তির টাকা জমা দেওয়ার শেষ দিন। কোনও উপায় না পেয়ে শেষে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ১৮ বছরের মেধাবি পড়ুয়া। সেখানেই অতুলের ত্রাতা হল সুপ্রিম কোর্ট। অনুচ্ছেদ ১৪২-এর অধীনে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে ওই তরুণকে আইআইটি ধানবাদে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিল আদালত। এই মামলায় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানালেন, 'আমরা এমন প্রতিভাকে হারিয়ে যেতে দিতে পারি না।'
দিন মজুরের সন্তান অতুল উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের বাসিন্দা। আদালতকে দেওয়া বয়ান অনুযায়ী তাঁর বাবার আয় দৈনিক ৪৫০ টাকা। এদিকে নামি শিক্ষাকেন্দ্রে ভর্তি হতে গেলে প্রয়োজন ১৭,৫০০ টাকা। যা জোগাড় করা রীতিমতো দুঃসাধ্য ছিল অতুলের পরিবারের কাছে। শেষে টাকা জোগাড় করা সম্ভব হলেও ভর্তির অন্যান্য নথিপত্র আপলোড করে অনলাইনে অর্থ প্রদানের জায়গায় আসতে আসতে ৫টা বেজে যায়। যার জেরে আটকে যায় ভর্তি। এই অবস্থায় ভর্তি হতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন অতুল। প্রথমে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্ট তার পর মাদ্রাজ হাই কোর্ট হয়ে শেষে শীর্ষ আদালতে দ্বারস্থ হন তিনি।
এই মামলার শুনানিতে আইআইটি ধানবাদের আইনজীবী জানান আইআইটি ধানবাদের তরফে টাকা জমা করানোর জন্য দুটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও পাঠানো হয়। পাশাপাশি এনআইসির (ন্যাশনাল ইনফর্মেটিক সেন্টার) তরফে এসএমএসও করা হয়। অতুল প্রতিদিন আইআইটি-এর সাইটে লগইন করেও, টাকা জমা দেয়নি বলে দাবি করেন আইনজীবী। পালটা আদালত প্রশ্ন করে, 'কেন আপনি সমস্যা সমাধানের উপায় না খুঁজে শুধু বিরোধিতা করছেন? আসন বরাদ্দের ইন্টিমেশন স্লিপ বলছে, আপনারা চেয়েছিলেন যে সে ফি জমা দিক। সে তা করলে, অন্য কিছুর প্রয়োজন ছিল না।'
এর পর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'ওই তরুণ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। মাত্র ১৭ হাজার টাকা তাঁকে আটকে দিয়েছে। শুধুমাত্র টাকা নেই বলে কাউকে এভাবে বাদ দেওয়া যায় না। আমাদের নির্দেশ ওকে ভরতির অনুমতি দেওয়া হোক। টাকা দিলে যে ব্যাচে ওর ভর্তি হওয়ার কথা ছিল সেই ব্যাচেই যে ভর্তি নেওয়া হয়। তবে এ জন্য ওই ব্যাচের কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। একটি সুপারনিউমারারি আসন তৈরি করতে হবে।' সব শেষে ওই পড়ুয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ভালো করে পড়াশুনা করো। তোমার জন্য শুভকামনা রইল।' আইআইটিতে ভর্তি হতে পেরে খুশি অতুল। তিনি বলেন, 'অবশেষে আমার জীবন ট্র্যাকে ফিরল।'