সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) নোটবন্দির (Demonetisation) মামলায় মুখ পুড়ল কেন্দ্রের। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতা ও তার প্রক্রিয়া নিয়ে মামলা চলছে শীর্ষ আদালতে। গত শুনানিতে ৯ নভেম্বর বুধবারের মধ্যে এই বিষয়ে হলফনামা পেশ করতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রকে। যদিও গতকাল হলফনামা জমা দিতে ব্যর্থ হয় সরকার পক্ষের আইনজীবীরা। এর পরেই উষ্মা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এমন আচরণ ‘অস্বস্তিকর’, মন্তব্য করে আদালত। পাশাপাশি মামলার শুনানি আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতুবি করে বিচারপতিদের বেঞ্চ।
ছয় বছর আগে ২০১৬ সালে আচমকা নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে এই সংক্রান্ত শুনানিতে রাজি হয় আদালত। ১২ অক্টোবরে হয় প্রাথমিক শুনানি। ওই দিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এই বিষয়ে জবাবদিহি করা কেন্দ্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে দেশের আমজনতার আদৌ লাভ হয়েছে কি না, এই বিষয়ে ৯ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা মারফত জানাতে হবে মোদি সরকারকে।
[আরও পড়ুন: রাজস্ব ঘাটতির গুঁতো, বাজেটের তুলনায় খরচে কাটছাঁট করছে কেন্দ্র, চাপ একাধিক ক্ষেত্রে]
যদিও গতকাল আদালতে জবাবদিহি করতে অসমর্থ হয় সরকার পক্ষ। কেন্দ্রের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কে ভেঙ্কটরমাণি হলফনামা পেশ করতে না পারার জন্য ক্ষমা চান। এবং আরও এক সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করেন বিচারপতিদের কাছে। বিচারপতিরা ২৪ নভেম্বর অবধি হলফনামা পেশ করার সময় বাড়ান। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। উষ্মা প্রকাশ করে আদালতের তরফে মন্তব্য করা হয়, এমন আচরণ ‘অস্বস্তিকর’।
[আরও পড়ুন: তিনদিন বাদে হাজারের উপরে দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, বাড়ল মৃত্যুও]
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাত ৮টায় আচমকা নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির ঘোষণা ছিল, দুর্নীতি এবং কালো টাকায় রাশ টানার উদ্দেশ্যে তাঁর সরকারের নোট বাতিলের পদক্ষেপ করছে। অথচ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, এ দেশে মানুষের হাতে এই মুহূর্তে রেকর্ড পরিমাণ নগদ টাকা রয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য প্রথম থেকেই বলে আসছিল, নোট বাতিল গিমিকের রাজনীতি। মোদির দাবি অনুযায়ী ফল মেলেনি। উলটে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এটিএম কাউন্টারে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে, স্রেফ হটকারি সিদ্ধান্ত। আরবিআইয়ের সাম্প্রতিক তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধীদের দাবি, তাদের কথাতেই শিলমোহর দিল ভারতের শীর্ষ ব্যাংক।