সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইলেক্টোরাল বন্ড 'অসাংবিধানিক'। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এমনই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। এবার সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবিতে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছিল মামলা। তবে সে আবেদন ধোপে টিকল না। আর্জি খারিজ করে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, 'সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাতে কোনও ভুল আমাদের নজরে পড়ছে না। ফলে পুনর্বিবেচনার প্রশ্নই ওঠে না।'
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে জানিয়ে দিয়েছিল, মোদি জমানায় চালু হওয়া ইলেক্টোরাল বন্ড অসাংবিধানিক। এটি সংবিধানের ১৯-এর এ ধারার পরিপন্থী। দ্রুত সেটা বন্ধ হওয়া উচিত। সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, ইলেক্টোরাল বন্ড ভোটারদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে। বেঞ্চের বক্তব্য, রাজনৈতিক দলগুলি ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার অধিকার রয়েছে সাধারণ ভোটারদের। ইলেক্টোরাল বন্ড সেই অধিকার খর্ব করছে। এমনকি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বন্ডের মাধ্যমে কোন দল কত টাকা চাঁদা পেয়েছে সে তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য হয় স্টেট ব্যাঙ্ক।
আদালতের সেই নির্দেশের পর স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলি। রিপোর্টে দেখা যায়, বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে বিজেপি। ৬৯৮৬.৫ কোটি টাকা পড়েছে গেরুয়া শিবিরের তহবিলে। এবার সেই নির্দেশের পুনর্বিবেচনার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী ম্যাথু নেদুমপারা-সহ বেশ কয়েকজন। যদিও সেই আবেদন গুরুত্বই পেল না সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, মূলত তিন ধরনের উপায়ে নির্বাচনী বন্ডে টাকা তোলা হয়েছে। যেখানে বরাত পাইয়ে দিয়ে। ইডি, আয়কর বিভাগ ও সিবিআই অভিযানের ভয় দেখিয়ে। এবং সংস্থার পক্ষে অনুকুল নীতি তৈরি করে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে একাধিক সংস্থাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটের আগে বলেছিলেন, "নির্বাচনী বন্ড আদৌ কোনও স্বচ্ছতার কর্মসূচি নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তোলাবাজির চক্র। আর নরেন্দ্র মোদি তার মাস্টারমাইন্ড।"