সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর (Thiruvananthapuram International Airport) আদানিদের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে কেরল সরকারের বিরোধিতা ধোপে টিকল না। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) খারিজ হয়ে গেল পিনারাই বিজয়নদের আবেদন। দরপত্র দেখে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ জানায়, কাউকে পাইয়ে দেওয়ার জন্য অনিয়মের যে অভিযোগ তুলেছিল কেরল সরকার, তা ভিত্তিহীন। নিয়মের প্রয়োজনেই তা বদল করা হয়েছিল বলে জানান বিচারপতিরা। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর তিরুঅনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থাকছে আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের (AEL) হাতেই।
দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের বেসরকারিকরণের কাজ শুরু হয়েছে দ্বিতীয় এনডিএ (NDA) সরকারের আমলে। আপাতত যে কটি বিমানবন্দর সেই তালিকায় রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম কেরলের তিরুঅনন্তপুরম। ২০২১ সালের অক্টোবরে নিলামের (Bid) মাধ্যমে এই বিমানবন্দরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল শিল্পপতি গৌতম আদানি (Gautam Adani) গোষ্ঠীর হাতে। প্রসঙ্গত, ওই নিলামে অংশ নিয়েছিল কেরলের সরকারের শিল্প উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু দরপত্রের প্রতিযোগিতায় তারা আদানিদের পিছনে পড়ে গিয়েছে। ফলে বিমানবন্দরের দায়িত্ব পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। আগামী ৫০ বছরের লিজ রয়েছে।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলা: আগামী ২৪ ঘণ্টা সায়গলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়, ইডিকে নির্দেশ আদালতের]
তবে তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরের এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় নিয়মে গলদ রয়েছে, এই অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। অভিযোগ ছিল, আদানি গোষ্ঠীকে তা পাইয়ে দেওয়ার স্বার্থে নিলামে রদবদল করা হয়েছিল। কিন্তু কেরল হাই কোর্ট সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। পরে আবার হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের যায় সরকার। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চও বিজয়ন সরকারের অভিযোগ খারিজ করে দিল। বিচারপতিরা জানান, কোনও স্বার্থেই নিয়ম বদল করা হয়নি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
[আরও পড়ুন: পরীক্ষার আগেই ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছে যেত প্রশ্ন! টেট দুর্নীতির তদন্তে ইডির হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
তথ্য বলছে, নিলামে আদানি গোষ্ঠী যাত্রী পিছু ১৬৮ টাকা করে কেরল সরকারকে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আর সে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাব ছিল যাত্রী পিছু ১৩৫ টাকা করে দেওয়ার। ফলে স্বভাবতই এগিয়ে গিয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, আসলে বামশাসিত কেরল সরকার বরাবরই বেসরকারিকরণের (Privatization) বিরুদ্ধে। তাই রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন বোর্ডকে নিলামে অংশগ্রহণ করিয়ে তার দায়িত্ব বকলমে নিজেদের হাতে রাখতে চেয়েছিল। তাতে ব্যর্থ হয়েই এমন অভিযোগ তুলছে। তবে শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পর তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরের মালিকানা নিয়ে আর অভিযোগ জানানোর মতো মুখ রইল না বিজয়নদের, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের।